এশিয়া কাপে উড়ন্ত সূচনা পেল আফগানিস্তান। ‘বি’ গ্রুপের খেলায় পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে দাঁড়াতেই দেয়নি আফগানরা। একপেশে ম্যাচে বল-ব্যাট হাতে চোখ ধাঁধানো পারফর্ম করে আফগানিস্তান উদ্বোধনী ম্যাচে জিতেছে ৯ উইকেটের ব্যবধানে। আগামী ৩০ আগস্ট এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই এবারের এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ, যারা শ্রীলঙ্কার ছুঁড়ে দেওয়া ১০৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারেই জড়ো করে ৮৩ রান।
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। তারুণ্যনির্ভর শ্রীলঙ্কাকে শুরুতেই কোণঠাসা করে ফেলেন পেসাররা। প্রথম ওভারেই অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সফল করে তোলেন পেসার ফজলহক ফারুকী। অন ফিল্ড আম্পায়ার সাড়া না দিলেও ডিআরএসের সহায়তায় সাজঘরে ফেরান কুশল মেন্ডিসকে।
প্রথম ওভারের শেষ বলে গোল্ডেন ডাকের শিকার হন চারিথ আসালঙ্কা। কুশলের মতো তাকেও এলবিডব্লিউ করেন ফারুকী। পরের ওভারে নাভিন উল হক পাথুম নিসাঙ্কাকে রহমানউল্লাহ গুরবাজের ক্যাচে পরিণত করেন। যদিও অন ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নিয়েছিলেন নিসাঙ্কা। তখন ব্যাটের স্পর্শ স্পষ্ট না হলেও তৃতীয় আম্পায়ার অন ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত বলে ঘোষণা করেন।
২ ওভারে ব্যাটিং ইউনিটের কোমর ভেঙে গেলেও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন দানুশকা গুনাথিলাকা ও ভানুকা রাজাপক্ষে। ভানুকা একপ্রান্ত আগলে রাখলেও ১৭ বলে ১৭ রান করে গুনাথিলাকা দলীয় ৪৯ রানে বিদায় নিলে আবারও ধ্বস নামে। তাকে সাজঘরে ফেরানোর পর লেগ স্পিনার মুজিব উর রহমান ফেরান ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকেও। দলীয় ৬৪ রানে অধিনায়ক দাসুন শানাকাকে হারায় লঙ্কানরা।
চাপের মুখে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে রানআউটের শিকার হন ভানুকা। দারুণ খেলতে থাকা ভানুকা ২৯ বলে ৩৮ রান করেন ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সহায়তায়। এতে শ্রীলঙ্কার শেষ আশাটুকুও শেষ হয়ে যায়। বিবর্ণ লঙ্কানরা পরের বলে রান আউটের মাধ্যমেই হারায় মাহিশ থিকশানাকে। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ার শেষ পর্বটা অবশ্য এত দ্রুত শেষ হয়নি। লোয়ার অর্ডারে চামিকা করুনারত্নের ৩৮ বলে গড়া ৩১ রানের ইনিংসে মান বাঁচায় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসর ২ বল বাকি থাকতে অলআউট হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার পুঁজি দাঁড়ায় ১০৫ রান। শেষ উইকেটে অভিষিক্ত মাদুশঙ্কাকে নিয়ে ২৫ রান যোগ করেন চামিকা, যেখানে ১ রান করা দিলশান মাত্র ২ বল মোকাবেলা করেন।
আফগানিস্তানের পক্ষে ফজলহক ফারুকী তিনটি এবং মুজিব উর রহমান ও অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী দুটি করে উইকেট শিকার করেন। কোনো উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান খরচ করেন রশিদ খান।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আফগানিস্তান পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে জড়ো করে ৮৩ রান। এর পরপরই অবশ্য বিদায় নিতে হয় বিধ্বংসী ব্যাটিং করা রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। সাজঘরে ফেরার আগে ১৮ বলে ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪০ রান করেন তিনি। গুরবাজের বিদায়ের পর আরেক ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাইকেও ফিরতে হয় সাজঘরে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হওয়ার আগে ২৪ বলে ৩৬ রান করেন তিনি।
শেষপর্যন্ত ১০.১ ওভারে ৮ উইকেট হাতে রেখে আফগানিস্তান জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। ইবরাহিম জাদরান ১৩ বলে ১৫ ও জানিবউল্লাহ জাদরান ২ বলে ২ রান করে অপরাজিত থাকেন। এই জয়ে ‘বি’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছেন রশিদ-নবীরা।
জেএন/কেকে