আগামী দু-এক দিনের মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
আজ সোমবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তেলের সমন্বয় কিছুটা করব। এখন তার যাচাই-বাছাই চলছে। সরকার যেহেতু আমদানি শুল্ক কমিয়েছে, সেটা হয়তো আমাদের জন্য কিছুটা স্বস্তির সংবাদ। কিন্তু বিশ্ববাজারে তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ১৫০ মার্কিন ডলারে উঠেছে প্রতি ব্যারেলে। এই পরিস্থিতিতে আমরা কতটুকু সমন্বয় করতে পারব, কারণ এখানে ভর্তুকির একটা বড় অংশ যোগ হবে আবার।’
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যখন ১১৪ টাকা প্রতি লিটার ডিজেলের দাম ছিল তখন আট টাকার ওপরে ভর্তুকি ছিল। এখন হয়তো সে টাকাটা আরো বাড়তে পারে। এসব পর্যালোচনা করে আমরা দেখব, তারপরে সিদ্ধান্ত নেব।’
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অগ্রিম কর এবং আমদানি শুল্ক কমানোর কারণে জ্বালানি তেলের দাম কতটুকু কমবে সেটা আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে জানা যাবে। তবে এ সুবিধা ভোক্তা পর্যায়ে কবে নাগাদ পৌঁছবে সেটা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় নির্ধারণ করবে।
গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে ডিজেল আমদানিতে অগ্রিম কর প্রত্যাহার এবং পাশাপাশি ডিজেলের আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করেছে।
গত ৫ আগস্ট বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পাশের দেশে তেল পাচার ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) লোকসান কমানোর কারণ দেখিয়ে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ বৃদ্ধি করেছিল। এতে প্রতি লিটার ডিজেল ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে পরিবহন, কৃষি, শিল্পসহ সব ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়েছে। একসঙ্গে তেলের দাম এত বাড়ানোর ফলে জীবনযাত্রায় বেড়ে যায় অসহনীয় চাপ। বাড়তি এ আর্থিক চাপের ফলে শিল্প উৎপাদনে বেড়েছে অতিরিক্ত খরচ। এ ছাড়া পরিবহন খরচ বৃদ্ধির ফলে কাঁচামাল ও অন্যান্য দ্রব্যের মূল্য লাগামছাড়া। প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষিকাজে অতিরিক্ত ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে জ্বালানি তেলের মধ্যে ৭৪ শতাংশই ব্যবহার হয় ডিজেল। এখন ডিজেলের দাম কমলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে মানুষ। বিশেষ করে পরিবহন ও সেচে কিছুটা স্বস্তি আসবে।
বিপিসির সূত্রে জানা যায়, দেশে বছরে এখন জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৭৪ শতাংশই ব্যবহৃত হয় ডিজেল। মোট জ্বালানি তেলের ব্যবহার প্রতিবছর কিছুটা বৃদ্ধি পায়।
জেএন/কেকে