এশিয়া কাপের ‘বি’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে হারিয়ে সুপার ফোরে পৌঁছে গেছে আফগানিস্তান। এর আগে শ্রীলঙ্কাকে হারানোয় আফগানরা ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মর্যাদা লাভ করল। ১ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশ ম্যাচের জয়ী দল পাবে সুপার ফোরের টিকিট।
শারজায় টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, যা অবাক করে সবাইকে। স্পিন বান্ধব উইকেটে বাংলাদেশের একাদশে পেসার ছিলেন ৩ জন, স্পিনার ২জন। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই খেই হারিয়ে ফেলে টাইগাররা। দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও এনামুল হক বিজয় আস্থার প্রতিদান দিতে পারেননি। ৪ হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলার পর দলীয় ৭ রানে সাজঘরে ফেরেন নাঈম শেখ, (৮ বলে ৬ রান করে। নড়বড়ে ছিলেন এনামুল হক বিজয়ও, দলীয় ১৩ রানে সাজঘরে ফেরার আগে ১৪ বলে মাত্র ৫ রান করেন তিনি।
ওয়ান ডাউনে নামা সাকিব আল হাসান ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিলেও দুই ওপেনারের মতো তিনিও মুজিব উর রহমানের শিকারে পরিণত হন। দুটি চার হাঁকিয়ে ৯ বলে ১১ রান করেন তিনি। এরপর টাইগাররা যখন ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া, তখন বিপদজনক হয়ে ওঠেন রশিদ খান। দলীয় ৫৩ রানের মধ্যে তিনি শিকার করেন মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেন ধ্রুবকে। প্রথম ৫ উইকেটের তিনটিই ছিল এলবিডব্লিউ, দুটি বোল্ড। এর মধ্যে দুটি উইকেট আফগানরা শিকার করে রিভিউয়ের সহায়তায়।
এরপর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনে গড়েন ৩৬ রানের পার্টনারশিপ। এই জুটিও ভাঙেন রশিদ। উইকেটে থিতু হওয়ার পর রান পোষাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ডিপ মিডউইকেটে, ইবরাহিম জাদরানের হাতে। ২৭ বলে ২৫ রান করে থামে রিয়াদের ইনিংস।
শেষপর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান দাঁড়ায় বাংলাদেশের সংগ্রহ। সতীর্থদের মলিন ব্যাটিংয়ের দিনে ৩১ বলে ৪৮ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি, হাঁকান ৪টি চার ও ১টি ছক্কা। শেষ ওভারে আউট হওয়া শেখ মেহেদী হাসান ১২ বলে ১৪ রান করেন। আফগানদের পক্ষে মুজিব উর রহমান ও রশিদ খান তিনটি করে উইকেট শিকার করেন।
জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের চাপ সামলাতে হয়েছে আফগানদের। ৬ রানে থাকাকালে সাকিব আল হাসানের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ক্যাচ ফেলে জীবন পাইয়ে দেন রহমানউল্লাহ গুরবাজকে। তবে সাকিবের শিকার হয়েই ফিরতে হয় তাকে। তার আগে ১৮ বলে ১১ রান করেন আগের ম্যাচে বিধ্বংসী ইনিংস খেলা এই ওপেনার।
গুরবাজের বিদায়ের পর খোলস ছেড়ে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন হজরতউল্লাহ জাজাই। তবে ২৬ বলে ২৩ রান করে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সবলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। দলীর রানের অর্ধশতকের আগে দুই ওপেনারকে হারানো আফগানরা ১০ ওভারে জড়ো করে ৪৮ রান।
দ্বাদশ ওভারের মধ্যেই সাকিব ৪ ওভার সম্পন্ন করেন, একটি উইকেট শিকার করেন মাত্র ১৩ রানের বিনিময়ে।প্রায় দশ মাস পর নেমে প্রথম ওভারেই নবীকে ফেরান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, ত্রয়োদশ ওভারে দলীয় ৬২ রানে।
এরপর ম্যাচ বের করে নেন ইবরাহিম জাদরান ও নাজিবউল্লাহ জাদরান। উইকেটে থিতু হওয়ার পর নাজিবউল্লাহ চড়াও হন তাসকিন-মুস্তাফিজদের ওপর। ইবরাহিমের সাথে চতুর্থ উইকেটে ৬৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ৯ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। ইবরাহিম ৪১ বলে ৪২ রান করে অপরাজিত থাকেন। বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে নাজিবউল্লাহ ৪৩ রান করেন মাত্র ১৭ বলের মোকাবেলায়, হাঁকান ৬টি ছক্কা।
জেএন/কেকে