দস্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক সাধারণ মানুষ ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছে কি না, সেটি নিশ্চিতে হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের মাসিক সভা নিয়মিত করার তাগিদ দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ছয় জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য স্থাপনা ও প্রান্তিক পর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মীদের ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধি ও হাসপাতালপ্রধানের অনেক দায়িত্ব। ডাক্তার, নার্স ঠিকমতো আসেন কি না, সেটি দেখতে হবে। টয়লেট ও বেড ঝকঝকে থাকতে হবে। তবেই আন্তর্জাতিক মানের সেবার পরিবেশ ঠিক থাকবে। আর এটি ঠিকমতো হচ্ছে কি না, সেটি দেখার দায়িত্ব পর্ষদের।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবাকে কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছে সরকার। কিন্তু করোনা মহামারিতে কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। ইউনিয়ন থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্যক্রম মনিটরিংয়ে রাখা হয়েছে। মেশিন, লোকবল ঠিক আছে কি না, মানুষ সেবা পাচ্ছে কি না সেগুলো দেখা হচ্ছে।’
স্থানীয় সংসদ সদস্যের এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, ‘বুড়িচং উপজেলায় না থাকা এক্স-রে মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি দেওয়া হবে। মানুষ সেবা পাচ্ছে কি না, সেটি দেখার জন্য মাসিক যে কমিটি আছে, সেটি ঠিকমতো করতে হবে। নতুবা মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাবে না। সরকারপ্রধান চান, মানুষ যাতে চাহিদা অনুযায়ী সেবা পায়।’
এ সময় কুমিল্লা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা আহমেদ বলেন, ‘আমার দুই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যন্ত্র আছে, কিন্তু জনবল নেই। কনসালটেন্টরা থাকেন না। এসব সংকটে মানুষকে সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত এগুলোর ব্যবস্থা করা দরকার।
স্থানীয় সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অবকাঠামো ও যন্ত্রপাতির অভাব নেই, কিন্তু জনবলের অভাব রয়েছে। তবে গত ৫০ বছরে যেখানে ১৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ হয়েছে, করোনার দুই বছরে সেটি দ্বিগুণ বেড়েছে। নার্সও তিন গুণ হয়েছে। আমরা কাজ করেছি বলেই স্বাস্থ্যসেবা এগিয়ে গেছে। আমরা এ বিষয়ে কাজ করেছি, মাঠে নেমেছি। যা যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার, তা নেওয়া হবে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছেছে। সেখানে ৩০-৩২ ধরনের ওষুধ পাচ্ছে রোগীরা। বাংলাদেশে এখন দেড় লাখ শয্যা। প্রতিটি বড় হাসপাতালে আইসিইউ আছে। পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণের হার যেটা একসময় দুই ভাগও ছিল না, এখন তা ৬৫ শতাংশ। আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন অনেক হয়েছে। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালে সেবার মান বেড়েছে। ব্রেন টিউমার, বাইপাস সার্জারির মতো রোগের অপারেশন দেশেই হচ্ছে। কোনো ওষুধের অভাব নেই।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘টিকা-সংক্রান্ত সব কাজে ৪৫ হাজারের মতো টাকা ব্যয় হয়েছে। ৩০ হাজার মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে বিনা মূল্যে। কুমিল্লাতেই আইসিইউ, আরটিপিসিআরসহ জিন এক্সপার্ট মেশিন দেওয়া হয়েছে। ফলে সব ধরনের জরুরি সেবা মিলবে জেলাতেই। ঢাকায় কষ্ট করে যেতে হবে।’
জেএন/কেকে