চট্টগ্রামে পাইকারি চালের বাজারে বস্তায় দেড়/দুশ টাকা কমল

চট্টগ্রামের চালের বৃহৎ পাইকারি বাজার পাহাড়তলী ও চাক্তাইয়ে গেল এক সপ্তাহের ব্যবধানে বস্তা প্রতি ১৫০ টাকা থেকে ২শ টাকা পর্যন্ত কমেছে চালের দাম।

- Advertisement -

শুল্ক কমানোর কারণে এবং সরকারের ভর্তুকি মূল্যে চাল বিক্রির কারণে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম অনেকটা কমে এসেছে বলে মনে করছেন বড় দুই পাইকারী বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী।

- Advertisement -google news follower

শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের চাক্তাই ও পাহাড়তলী চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চিনিগুড়া চাল বস্তাপ্রতি ৫৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গেল সপ্তাহেও এক বস্তা কিনতে দাম পড়েছে ৬ হাজার টাকা।

মোটা আতপ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকা। আগের সপ্তাহে মূল্য ছিল ১৭৫০ টাকা। বস্তা প্রতি দেড়শ টাকা কমে এ সপ্তাহের বাজারে জিরাশাল চাল বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ৩৫০০ টাকায়।

- Advertisement -islamibank

দুই হাজার ৩৫০ থেকে ২৪০০ টাকায় স্বর্ণা সিদ্ধ, ২ হাজার ৫০০ টাকায় পাইজাম ও নাজিরশাইল নামে পরিচিত চাল বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়।

চট্টগ্রাম চাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওমর আজম ও পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিনসহ বেশ কয়েজন পাইকারী ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মাসের শুরু থেকে ভর্তুকি মূল্যে চাল বিক্রি কর্মসূচি শুরু হওয়ায় এবং আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে আনার পর চট্টগ্রামে পাইকারি বাজারে চালের দাম কিছুটা কমেছে। তবে সাথে সাথে চালের বিক্রিও কমেছে।

চাক্তাই পাইকারি বাজারের চাল ব্যবসায়ি সিহাব জানালেন, গত কয়েক বছর যাবত বড় কয়েকটা ব্যবসায়ী গ্রুপ চালের ব্যবসায় নেমেছে। তারা প্রতিবছর সুযোগ বুঝে চাল ক্রয় শুরু করে এবং মজুদ করে রাখে।

পরে বাজারে সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে ধীরে ধীরে দাম বাড়িয়ে বিক্রি করে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। খুচড়া পর্যায়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সংঘবদ্ধ হয়ে আগেভাগে পাইকারী বাজার থেকে কমদামে চাল ক্রয় করে মজুদ রেখে দিয়েছে।

ফলে পাইকারী বাজারের তুলনায় ভোক্তা পর্যায়ে চালের দামে কিছুদিন অস্তিরতা তৈরি হয়েছে। তবে সম্প্রতি তদারকিমূলক সংস্থাগুলোর অভিযান এবং শুল্ক কমানোয় মজুদ থাকা চাল ছাড়ছেন ব্যবসায়ীরা।

তাছাড়া ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে সরকারের ভর্তুকি মূল্যে চাল বিক্রি কর্মসূচি শুরু হওয়ায় গেল সপ্তাহের তুলনায় আমদানিকৃত চালের চাহিদা কমেছেি্এক প্রকার হঠাৎ করেই পাইকারী বাজারে চালের বিকিকিনি কমে গেছে।

ব্যবসায়ীদের কাছ জানা গেছে, সরকারের ভর্তুকি মূল্যে চাল বিক্রির কারণে প্রতি মাসে তিন লাখ টন বিক্রির চাহিদা কমবে। এই চাল খুচরা ব্যবসায়ীরাই বিক্রি করেন। এ কারণে পাইকারিতে এর প্রভাব পড়েছে।

চাল ব্যবসায়ী নেতা ওমর আজম বলেছেন, শুল্ক কমানোয় দাম কমার শঙ্কায় খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারী বাজার থেকে চাল কেনা কমিয়েছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে ভারত থেকে আসা বেতি চালের দাম। দেশীয় অন্য চালের দামও কিছুটা কমেছে।

তিনি বলেন, দেশের একটা বিরাট জনগোষ্ঠী কম দামে সরকারি ওএমএস এর চাল কেনেন। ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশজুড়ে সরকারের ভর্তুকি মূল্যে এ চাল বিক্রি কর্মসূচি শুরু করায় অন্তত তিন কোটি দরিদ্র ও কম আয়ের জনগোষ্ঠী কম দামে চাল কেনার সুফল পাচ্ছে।

ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫০ লাখ পরিবারের কাছে ১৫ টাকা দরে চাল বিক্রির অর্থ হচ্ছে প্রতি পরিবারে চারজন হিসাবে সরাসরি দুই কোটি ব্যক্তি উপকৃত হওয়া। আর খোলাবাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস)-এর আওতায় নগরসহ দেশজুড়ে ৩০ টাকা কেজিতে চাল কিনতে পারছে এক কোটি মানুষ। সে হিসাবে তিন কোটি গরিব, দুস্থ, অসচ্ছল, অসহায় ব্যক্তি বাজারদরের চেয়ে কমে সরাসরি চাল কিনতে পারছে।

ফলে হঠাৎ করেই পাইকারী বাজারগুলোতে বিভিন্ন প্রকারভেদে ৫০ কেজি ওজনের চালের প্রতি বস্তায় দেড়শ থেকে দুশ টাকা পর্যন্ত কমেছে। প্রতি কেজিতে কমেছে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। সামনে এ দাম আরো কমতে পারে বলে জানিয়েছেন এ ব্যবসায়ী নেতা।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM