সারাবিশ্বই তাকে চেনে এক নামে। ফুটবলকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করতে তার অবদান অনন্য। ফুটবলের যত রেকর্ড আছে তার পায়ের নিচে কুর্নিশ জানিয়েছে বারবার। তিনবার বিশ্বকাপ ট্রফিতে চুমু খাওয়া এই কিংবদন্তি হ্যাট্রিকই করেছেন শুধু ৯২ বার! তিনি আর কেউ নন। কালো মানিকখ্যাত ব্রাজিলের ফুটবল সম্রাট পেলে। আজ এই ফুটবল কিং এর জন্মদিন। ৭৮ পেরিয়ে ৭৯ বছরে পা দিলেন এই ফুটবল লিজেন্ড।
১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের মিনাস গেরাইসের ত্রেস কোরাকোয়েস শহরের এক বস্তি আলোকিত হয়েছিল এক কালো মানিকের জন্মে। দারিদ্র্যে নিমজ্জিত পেলের ছিল ফুটবলের প্রতি আজন্ম আগ্রহ। দারিদ্র্য জয় করা সেই পেলে কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে তুলে নিয়েছেন এক অনন্য উচ্চতায়।
এই কিংবদন্তি ফুটবল ক্যারিয়ারে অফিসিয়াল এবং আন অফিসিয়াল মিলে ১৩৬৬ ম্যাচে ১২৮৩ গোল করেছেন। কি নেই অপ্রতিরোধ্য এই মহাতারকার ক্যারিয়ারে! ব্রাজিলের ইতিহাসে এখনো সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে ৯২ ম্যাচে করেছেন ৭৭ গোল। তার সময়ে টানা ২ বার বিশ্বকাপ জেতা একমাত্র দলও ব্রাজিল। ফিফা বিশ্বকাপে ব্রাজিলের এই মহাতারকার গোল ১২টি। বিশ্বকাপসহ ব্রাজিলের হয়ে ট্রফি জিতেছেন মোট ১৩ টি।
৫ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার এই ফুটবলারকে বলা হত কৌশলের রাজকুমার। তার হেডিং দক্ষতা ছিল অসাধারণ। উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠানোয় সবসময় তার মাথা থাকতো প্রস্তুত। আর সময়ের বাই-সাইকেল গোলের অনন্য সব দূষ্টান্ত পেলে দেখিয়েছেন সেই ষাট ও সত্তরের দশকেই।
পেলের ক্যারিয়ারে একমাত্র অপ্রাপ্তি কোপা আমেরিকার ট্রফি জিততে না পারা। তবে তখন ব্রাজিলের মূল লক্ষ্য ছিল বিশ্বকাপ।
তাই কোপায় মূল দল পাঠাত না তারা। না হলে এই ট্রফির ও পেলের স্পর্শ পাওয়ার সুযোগ হত!
পেলের জীবনের অনেক উল্লেখযোগ্য ঘটনার মধ্যে একটা হল তার উপস্থিতির কারণে বন্ধ হয়েছিল যুদ্ধ। ১৯৬৭ সালে নাইজেরিয়ার গৃহযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে তার আগমন উপলক্ষে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয়েছিল। এই ঘটনাই প্রমাণ করে পেলের প্রতি সাধারণের ভালোবাসা কতটুকু।
জয়নিউজ/আরসি