চট্টগ্রাম নগরের বাকলিয়া খেতচর এলাকায় একটি অবৈধ বেনামি ঘাট তৈরি করে চাঁদা আদায় করছেন একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। চরে অবস্থান করা মাছ ধরার ফিশিং বোট, নদীতে নোঙ্গর করা বোট ও তেলবাহী বোটগুলো থেকে চাঁদা নিতে দেখা গেছে সিন্ডিকেট সদস্যদের।
প্রতিদিন ৫/৬ হাজার টাকা করে বছরে প্রায় ১৮ লাখ টাকা ধান্ধা হচ্ছে চক্রটি। ওই ঘাট দিয়ে চোরাচালান হয় নিয়মিত।
নগরীর পূর্ব বাকলিয়ার খেতচর এলাকায় কর্ণফুলীর উত্তর তীরে অবৈধ ঘাটটির অবস্থান। নদীতে জেগে উঠা চরে বালির বস্তা ও কাঠ ফেলে ঘাটটি তৈরি করা হয়েছে। ওই ঘাটে নোঙ্গর করা বোট থেকে নেওয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা।
সাগর থেকে মাছ শিকার করে তীরে আসার পর নেওয়া হয় ১ থেকে ২ হাজার টাকা। বোট থেকে মাছ নামানোর সময় প্রতি মাছের খাঁচা বাবদ নেওয়া হয় ৩০ টাকা। মাছের ঠেলাগাড়ি থেকে নেওয়া হয় ৫০ টাকা। এছাড়া সেখানে একটি দোকান তৈরি করে ভাড়া দিয়েছেন সন্ত্রাসী চক্রটি।
অভিযোগ আছে, কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী এলাকায় যে কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণের ওপর হাইকোর্টে নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও গত ৩ বছর ধরে বাস্তুহারা সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি শামসুল আলম তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রভাব খাটিয়ে কর্ণফুলী নদীর তীর দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে।
এসব স্থাপনা ও ঘাটগুলোর দখল থেকে বছরে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বর্তমানে। সোহেল কুটুম নামের এক যুবক মূলত ঘাটটি নিয়ন্ত্রণ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বেনামি ও অবৈধ ঘাটটি থেকে চাঁদা আদায় করছে শামসুল আলম ও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা। চরে অবস্থান করা মাছ ধরার ফিশিং বোট, নদীতে নোঙ্গর করা বোট ও তেলবাহী বোটগুলো থেকে মাশুল নিতে দেখা গেছে শাহাব উদ্দিন ও সাকিব নামের দুই ব্যক্তিকে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, ওই ঘাট দিয়ে চোরাই তেল, মাদক ও ইয়াবা নামে রাতের বেলায়। আর ওসব ঘিরে চলে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। ঘাট ঘিরে চালু রয়েছে জুয়ার আসর, সন্ধ্যার পর চলে অসামাজিক কাজ।
এ ব্যাপারে শাহাব উদ্দিনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, মানুষের সুবিধার জন্য ঘাটটি শামসুল আলম তালুকদার সাহেব করেছেন। প্রশাসন না চাইলে ঘাটটি উঠিয়ে নিবো।
জানতে চাইলে কয়েকজন ফিশিং বোটচালক বলেন, গত এক মাস ধরে সাগরে মাছ শিকার করছি। খেতচরের ঘাটে বোট নোঙ্গর করলে প্রতি ফিশিং বোট বাবদ ৫০০ টাকা দিতে হয়।
সোহেল কুটুম ও তার লোকজন এসেই টাকা নিয়ে যায়। মাছ ধরে আনার পর দেড় থেকে দুই হাজার টাকা ছাড়াও বড় বড় ৫-৬টি মাছ দিতে হয় তাদের।
জেএন/এফও/পিআর