এক মাসের বেতন দিয়ে ১০ দিনও চলা যায় না- দাবি করে নতুন বেতন কাঠামোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদ।
আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি তুলে ধরা হয়। আগামী এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপও কামনা করেন নেতারা।
তারা বলছেন, প্রজাতন্ত্রের সব স্তরের কর্মচারীদের প্রতিনিধিদের মনের ‘পুঞ্জীভূত অসন্তোষ ও ক্ষোভ’ নিরসনে দাবি পূরণ জরুরি।
আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. মাহমুদুল হাসানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মুখ্য সমন্বয়ক ওয়ারেচ আলী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন আরেক সমন্বয়ক লুৎফর রহমান, সভাপতিত্ব করেন ইব্রাহিম খলিল।
সংগঠনের মুখ্য সমন্বয়ক ওয়ারেচ আলী বলেন, ২০১৫ সালে দেয়া অষ্টম পে-স্কেলের ৭ বছর পূর্ণ করেছে। সব সময়ই পে-স্কেল ৪ বছর পূর্ণ হলেই মহার্ঘ্য ভাতা দিয়ে থাকে সরকার। কিন্তু এখন তা দেয়া হচ্ছে না। তার দাবি, তারা যে বেতন পান, তা দিয়ে মাসের ১০ দিনও চলা যায় না।
এ সময় কয়েকটি দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো
* ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণ ও পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখা।
* সচিবালয়ের মতো সব দপ্তর, অধিদপ্তর ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের পদনাম পরিবর্তনসহ দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রণয়ন।
* টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালসহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পুনর্বহাল। বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০ শতাংশের স্থলে ১০০ শতাংশ নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি এক টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ।
* সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়ন এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতন দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ।
* আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করে এই পদ্ধতিতে ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করা। ব্লক পোরে কর্মরত কর্মচারীসহ সব পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান।
* বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সমন্বয় করে সব ভাতা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে ও অধস্তন আদালতের কর্মচারীদের বিচার বিভাগীয় কর্মচারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা।
সংগঠনের সভাপতি ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘১১ থেকে ২০ গ্রেডের বঞ্চিত লাখ লাখ কর্মচারীর দাবির বিষয় বিবেচনা না করে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা সম্ভব নয়।’
সংবাদ সম্মেলনে পদবি নিয়েও বৈষ্যম্যের অভিযোগ করা হয়। এসব ‘বৈষম্য’ দূর করে আগের মতো টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড, সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহালের দাবিও তোলা হয় এ সময়।
শেষে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আলটিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হয়।
জয়নিউজ/পিডি