সিরাজগঞ্জে আবারও বঙ্গবন্ধু সেতুর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে। এ সময় বাল্কহেডে থাকা পাঁচ শ্রমিক সাঁতরে তীরে উঠেন। এর ঘণ্টাখানেকের মাথায় আরেকটি বাল্কহেড সেতুর অপর একটি পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে আটকে গেছে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সেতুর ১০ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ডুবে যায় প্রথম বাল্কহেডটি। পরে সাড়ে ১২টার দিকে ৯ নম্বর পিলারে ধাক্কা লেগে আটকে যায় আরেকটি বাল্কহেড।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। ডুবে যাওয়া বাল্কহেডটি সিরাজগঞ্জ থেকে বালু নিয়ে নারায়ণগঞ্জ ও আটকে থাকা বাল্কহেডটি সিরাজগঞ্জ থেকে বালুবোঝাই করে ফরিদপুর সিঅ্যান্ডবি ঘাটের দিকে যাচ্ছিল।
ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের শ্রমিক আক্তার হোসেন বলেন, দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আমরা সিরাজগঞ্জ হাজী সাত্তারের বালুর মহাল থেকে বালু ভর্তি করে বাল্কহেডটি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের দিকে রওনা দেই। নদীতে অতিরিক্ত স্রোতের কারণে পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর আমাদের বাল্কহেডটি ডুবে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা পাঁচজন লাইফ জ্যাকেট পরে সাঁতরে বেলকুচির রান্ধুনীবাড়ী চরে এসে উঠি। আমরা পাঁচজনেই সুস্থ আছি।
প্রত্যক্ষদর্শী বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর প্রকৌশলী ফারুক হোসেন বলেন, নদীতে অনেক পানি বাড়ছে। প্রবল স্রোতের কারণে বাল্কহেডটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম পাড়ের ১০ নং পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লাগে এবং সেখানেই ডুবে যায়। তার কিছুক্ষণ পর ৯নং পিলারের সঙ্গে আরেকটি বালুবোঝাই বাল্কহেড জোরে ধাক্কা দিয়ে আটকে যায়।
তিনি আরও বলেন, দুই দিন আগে একই স্থানে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে। ওই ঘটনায় একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম নৌপুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে পরিচয় পাওয়ার পর ‘খুব ব্যস্ত’ বলে ফোন কেটে দেন।
বঙ্গবন্ধু সেতুর সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাসুদ বাপ্পী বলেন, আজ সকালে সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মনজুর হোসেন স্যার বঙ্গবন্ধু সেতু পরিদর্শনে এসেছেন। স্যার সব কিছু দেখছেন। ডুবে যাওয়া বাল্কহেড সম্পর্কে এখনো জানি না। তবে একটি বালুবোঝাই বাল্কহেড আটকে আছে বলে জানতে পেরেছি।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানা ওসি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, দুপুর ১২টার দিকে জানতে পারি ১০নং পিলারের সঙ্গে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেড ধাক্কা লেগে ডুবে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও নৌপুলিশকে জানিয়েছি। পরে কী হয়েছে তা জানি না। তারা ঘণ্টাখানেক পর আমাদের জানায় ৯নং পিলারের সঙ্গে বালুবোঝাই আরেকটি বাল্কহেড জোরে ধাক্কা দিয়ে মাঝামাঝি অবস্থায় আটকে আছে।
আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে গিয়ে দেখি নদীতে প্রচণ্ড স্রোত। এর মাঝেই পিলারের সঙ্গে আটকে আছে বাল্কহেডটি। এতে নদীর স্রোতের পুরো চাপ গিয়ে পড়ছে পিলারে। এটি বিআইডব্লিউটিএ’র রেসকিউ নিয়ে এসে দ্রুত সরাতে হবে। তা না হলে যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে বিআইডাব্লিউএকে খবর দেবে নৌপুলিশ।
প্রসঙ্গত, গত ১১ সেপ্টম্বর বঙ্গবন্ধু সেতুর ৯নং পিলারের সঙ্গ একটি বালুবোঝাই বাল্কহেড ধাক্কা দিয়ে ডুবে যায়। এ ঘটনায় একজন নিখোঁজ হয়। ঘটনার দুইদিন পার হলেও নিখোঁজ ব্যক্তি উদ্ধার হয়নি।
জেএন/কেকে