দেশের প্রধান শেয়ার বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর (ডিএসই) এক অনুসন্ধান প্রতিবেদনে ব্যাপক কারসাজির তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। এতে নাম এসেছে মোনার্ক হোল্ডিংস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সাদিয়া হাসান।
ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আবুল খায়ের হিরো নামের একজন বিনিয়োগকারী ও তার স্বজন-সহযোগীরা গত বছরের নভেম্বরে মাত্র ১৫ দিনের কারসাজিতে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেনে ১৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মুনাফা তুলে নেন। এ সময় তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার কেনাবেচা করে কৃত্রিমভাবে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে এই মুনাফা তুলে নেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর ৫৯ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে এবং চলতি বছরের ৭ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত বিডিকম অনলাইনের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। ওয়ান ব্যাংকের শেয়ারের দামে বড় ধরনের উত্থানের সময় ব্যাংকটির উল্লেখযোগ্য পরিমাণ শেয়ার কেনাবেচার সঙ্গে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান জড়িত ছিল বলে ডিএসইর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
কারসাজিতে জড়িতদের মধ্যে রয়েছেন আবুল খায়ের হিরো, তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান (মোনার্ক হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক), বাবা আবুল কালাম মাতবর, বোন কনিকা আফরোজ তার সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠান ক্যান্ডেলস্টোন ইনভেস্টমেন্টস পার্টনার্স, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি জেনেক্স ইনফোসিস, ফরচুন শুজ ও সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস; আবু নাসের দুলাল, খোরশেদ আলম এবং সানোয়ার খান। এর মধ্যে আবুল খায়ের হিরো, আবুল কালাম মাতবর, খোরশেদ আলমের একাধিক বিও হিসাব ব্যবহার করা হয়।
জানা গেছে, সাকিব আল হাসান, জেনেক্স ইনফোসিস, ফরচুন শুজ ও সোনালি পেপারের নামে শেয়ার কেনাবেচার কাজটি তদারকি করেছিলেন হিরো।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কারসাজির হোতা আবুল খায়ের হিরোসহ চক্রের অন্য সবাইকে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। জরিমানার অর্থ আদায়ে বিএসইসি থেকে আদেশও জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার কারসাজির জন্য ও বাকি ৫৫ লাখ টাকা বিডিকমের শেয়ার কারসাজির জন্য জরিমানা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, বাজারের শৃঙ্খলা ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, কারও বিরুদ্ধে কারসাজির তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে আইন মেনে তা নিষ্পত্তি করা হয়। এ ধরনের ব্যবস্থা ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।
জেএন/কেকে