আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপির চিরাচরিত বাংলাদেশ বিরোধী অবস্থান ও স্বাধীনতাবিরোধী অপরাজনীতির গোপন অভিসন্ধির আবারও বহি:প্রকাশ ঘটেছে।
তিনি আজ এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহীমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, পাকিস্তান আমলে না কি ওনারা আরো ভাল ছিল! এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপির চিরাচরিত বাংলাদেশ বিরোধী অবস্থান ও স্বাধীনতাবিরোধী অপরাজনীতির গোপন অভিসন্ধির আবারও বহি:প্রকাশ ঘটেছে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, প্রগতি ও দেশপ্রেমে বিশ্বাসী কোনো ব্যক্তি কিংবা সংগঠন এই ধরনের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী মন্তব্য করতে পারে না।
প্রকৃতপক্ষে, তাদের এই ধরনের বক্তব্য প্রমাণ করে যে, মহান স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে তারা এখনও বাংলাদেশে পাকিস্তানি ধারার রাজনীতি প্রবর্তন করতে চায়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি, সাফল্য, উন্নয়ন ও অর্জন যখন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত তখন বিএনপি নেতারা পাকিস্তান আমলের প্রশংসা করেন! যেখানে খোদ পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ও গণমাধ্যমে বাংলাদেশের অগ্রসরমান অর্থনীতির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হচ্ছে, তখন বিএনপি নেতারা নিলর্জ্জভাবে পাকিস্তানের দালালি করছে। যখন তাদের বুদ্ধিজীবীরা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মতো একজন সুদক্ষ নেতৃত্বের আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করে তখন বিএনপি মহাসচিব পাকিস্তান আমলে ফিরতে চাচ্ছেন!
ওবায়দুল কাদের বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে যারা রাজনৈতিকভাবে এবং পারিবারিকভাবে পাকিস্তানি দর্শনের রাজনীতিকে লালন করে, তারা স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এখনও “পেয়ারে পাকিস্তান” মন্ত্র জপছে! বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এ ধরনের নিলর্জ্জ বক্তব্য শুধু রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিলই নয় বরং ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি। বিএনপি মহাসচিবের এই ধরনের বক্তব্য বিএনপিসহ একটি মহলের বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বহি:প্রকাশ।
সড়ক পরিবহনও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আজ দেশে সুশাসনের কথা বলছে! মানুষের নিরাপত্তার কথা বলছে! দারিদ্র্যতার কথা বলেছে! কিন্তু তারা ভুলে গেলেও দেশবাসী ভুলে যায়নি, বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশকে তারা কীভাবে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশকে নিমজ্জিত করেছিল বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে। বিদ্যুৎ ও সারের দাবিতে আন্দোলন করায় কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। হাওয়া ভবন খুলে অবাধ দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল, হাওয়া ভবনের মদদে অবৈধ কারসাজির মাধ্যমে রাষ্ট্রের সকল স্তরে নিজেদের দলীয় ক্যাডারদের নিয়োগ দিয়ে দেশের সকল প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছিল বিএনপি। ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি ও ছাত্রদলের ক্যাডারদের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগসহ অসংখ্য ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনসহ দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছিল বিএনপি।
শায়খ আবদুর রহমান, মুফতি হান্নান ও বাংলা ভাইয়ের মতো কুখ্যাত জঙ্গি নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের অভায়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছিল, দশ ট্রাক অস্ত্র, সিরিজ বোমা হামলাসহ অসংখ্য জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল বাংলাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৪ সালের একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার নেপথ্য কারিগর ও হামলাকারীদের পৃষ্ঠপোষকদের মুখে নিরাপত্তার কথা জনগণের সঙ্গে উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প দেখলে বিএনপি মেগা-যন্ত্রণায় ভোগে। কারণ বিএনপির সময় বাংলাদেশের অর্থনীতি এতটাই নাজুক অবস্থায় ছিল যে, তারা দেশে কোনো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মানসিকতা, সাহস, দক্ষতা এবং আর্থিক সামর্থ্যরে কথা চিন্তাও করতে পারে নাই। কারণ তারা দুর্নীতি ও লুটপাটে আকণ্ঠ নিমজ্জিত ছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা সুদক্ষ নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা, সততা ও মেধা দিয়ে বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। বিশ্বসভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।’
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ মঙ্গা-খরা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানি প্রেতাত্মা ও ষড়যন্ত্রকারীরা যতই অপচেষ্টা চালাক না কেন, বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বাংলার জনগণ দেশবিরোধী সকল চক্রান্ত মোকাবিলা করে উন্নয়নের এই অভিযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণে সক্ষম হবে।
জেএন/কেকে