মারমা সম্প্রদায়ের ‘ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে’ উৎসবে রঙ লেগেছে পাহাড়ে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান এ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঘিরে বান্দরবানে মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে তিন দিনব্যাপী উৎসব শুরু হয়েছে।
পুরাতন রাজবাড়ি মাঠ আকাশে ফানুস বাতি উড়ানোর মধ্যেদিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার, ক্ষুন্দ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের পরিচালক মংনুচিং, উৎসব উদ্যাপন কমিটির সভাপতি তিংতিং ম্যা ও সাধারণ সম্পাদক মংমং সিং।
পরে ময়ুর আকৃতির মঙ্গল রথযাত্রায় প্রদ্বীপ প্রজ্জলন করেন প্রধান অতিথি। তারপর আকর্ষণীয় রথটি রশি দিয়ে টেনে মারমা তরুণ-তরুণীরা কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ ক্যায়াং-এ নিয়ে যায়। এদিকে উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠানস্থল ছাড়াও আশপাশের ক্যায়াং এবং মারমা পল্লীগুলো থেকে নানা রঙের শত শত ফানুস আকাশে উড়ানো হয়। ফানুসের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে পাহাড়ি আকাশ।
বৌদ্ধা ধর্মাবলম্বীরা জানায়, তিন মাস বর্ষাবাস (উপুস) থাকার পর পাহাড়ি মারমা সম্প্রদায়ের লোকজন ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে (প্রবারণা পূর্ণিমা) উৎসব পালন করে। প্রচলিত আছে, বৌদ্ধ ধর্মের প্রবক্তা গৌতম বুদ্ধ এই আশ্বিনী পূর্নিমায় তার মাথার চুল আকাশে উড়িয়ে দিয়েছিল। তাই আশ্বিনী পূর্নিমার এই তিথিতে আকাশে উড়ানো হয় শত শত ফানুস। মারমা পাহাড়িদের মতে, আকাশে উঠার আগে যে ব্যক্তির ফানুস মাটিতে পড়ে যায় তিনি পাপী। একারণে ফানুস আকাশে উড়ানোর সময় পাহাড়িরা মারমা ভাষায় ‘সাও দো’ ‘সাও দো’ বলতে থাকে। অর্থাৎ শুভ মুক্তি।
উৎসব উদ্যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মংমং সিং বলেন, ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে উৎসব হচ্ছে মারমা সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ উৎসবে এবারো তিন দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে মঙ্গল রথযাত্রা, হাজার প্রদ্বীপ প্রজ্বলন, পিঠা তৈরি প্রতিযোগিতা, ফানুস বউড়ানো, পঞ্চশীল গ্রহণ, ধর্মীয় অনুষ্ঠানমালা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
জয়নিউজ