বিড়ালের অন্যরকম এক ফ্যাশনশো দেখল চট্টলাবাসী

পণ্য বিপণনের উপায় হিসেবে ফ্যাশন শো এখন বহুল প্রচলিত। সাধারণত এসব শোতে মডেলরা পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে নজরকাড়া সাজে ক্রেতাদের সামনে হাজির হন। তবে পণ্য বিপণন নয়, ব্যতিক্রমী এক ফ্যাশন শো হয়েছে চট্টগ্রামে। মিনি, আদর, পুষি, জোজো, টুকু, টাইগার নাম ধরে ডাকলেই ঘাড় ফিরিয়ে সাড়া দেয়। চোখ বড় বড় করে তাকায়।

- Advertisement -

শুক্রবার নগরীর ওয়্যারলেস মোড়ে বার্ডস অ্যান্ড পেট অ্যানিমেল ক্লিনিক আয়োজিত বিড়ালের মেলায় ফ্যাশন শোতে অংশ নেয় নানা রংয়ের ঝকঝকে পোশাক, চোখে সাহেবি চশমা পরা বিড়াল। শোতে নানা ভঙ্গিতে হেঁটে দর্শকদের আনন্দ দেয় প্রাণীগুলো।

- Advertisement -google news follower

আয়োজকরা জানান, মেলায় নিজেদের পোষা শতাধিক বিড়াল নিয়ে হাজির হন এদের মালিকরা। দেশি-বিদেশি জাতের এসব বিড়ালের কারও গায়ে ছিল নানা রংয়ের পোশাক, চোখে ছিল চশমা। কোনো কোনোটির গলায় পরানো ছিল ঘণ্টা। বিভিন্ন বয়সের বিপুল সংখ্যক মানুষ এ প্রদর্শনী উপভোগ করেন।

তারা আরও জানান, মেলায় পোষা প্রাণীগুলোর বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থাও ছিল। বিড়াল পোষায় করণীয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেন প্রাণী চিকিৎসকরা।

- Advertisement -islamibank

বার্ডস অ্যান্ড পেট অ্যানিমেল ক্লিনিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. সাদ্দাম হোসেন জানান, খাবার হিসেবে বিড়ালের প্রথম পছন্দ ইঁদুর। এটি ইঁদুর খেয়ে খাদ্যশস্য, গৃহস্থালি সামগ্রী ও দোকানের পণ্যসামগ্রী সুরক্ষায় সাহায্য করে। আবার বিড়াল মানুষকে আনন্দও দেয়। তাই অনেকেই প্রাণীটি পুষতে ভালোবাসেন। বিড়ালের প্রতি এই ভালোবাসা আরও বাড়াতে প্রদর্শনীটির আয়োজন করা হয়।

আয়োজকরা জানান, ফ্যাশন শোতে অংশ নেয় দেশি-বিদেশি জাতের ১৫টি বিড়াল। এদের মধ্যে তিনটি বিড়ালকে পুরস্কৃত করা হয়। বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভজন চন্দ্র দাস, মোহাম্মদ ইউসুফ এলাহী চৌধুরী ও সহকারী অধ্যাপক রিদওয়ান পাশা।

তবে বিড়াল নিয়ে প্রদর্শনীতে আসা কয়েকজন জানান, ছোট্ট পরিসরে অনেক দর্শক সমাগম হওয়ায় পোষা বিড়ালরা অস্বস্তিত্বে পড়ে। তার ওপর তীব্র গরম ছিল প্রদর্শনীতে। ভবিষ্যতে খোলা মাঠে বড় পরিসরে এ ধরনের আয়োজন করলে ভালো হয়।

কোলে নিজের পোষা বিড়াল নিয়ে এসেছেন কলেজছাত্র অনিক চৌধুরী। তিনি বলেন, বিদেশি বিড়ালের পাশাপাশি দেশি বিড়ালও আছে আমার। একেকটি বিড়ালের বৈশিষ্ট্য আলাদা। তাদের পছন্দের খাবার, যত্নও আলাদা। আশার কথা হচ্ছে চট্টগ্রামে পোষা পশু-পাখির চিকিৎসার জন্য হাতের কাছে সিভাসু আছে।

আয়োজকরা বলছেন, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে, সঙ্গে বদলে যাচ্ছে মানুষের জীবনযাত্রা, আর্থিক উন্নতির পাশাপাশি মানুষ নিজের মানসিক প্রশান্তির উদ্দেশ্যে পালন করছে বিভিন্ন প্রজাতির পোষাপ্রাণি। যাদের মাধ্যমে মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ও মানবিক গুণাবলি প্রকাশ পাচ্ছে। মানুষের এই প্রশান্তির ধারক ও বাহকের মধ্যে বিড়াল অন্যতম।

বাংলাদেশেও বিড়াল পালনের প্রবণতা দিন-দিন বাড়ছে, বিশেষ করে বিড়াল পালনের মাধ্যমে শিশুদের মানসিক বিকাশ উন্নত হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতাকে কাজে লাগাতে ও প্রাণির প্রতি মানুষের ভালোবাসা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘বার্ডস অ্যান্ড পেট এনিম্যাল ক্লিনিক’ বিড়াল প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।

জেএন/কেকে

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM