চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এন.এম নাসিরুদ্দিন বলেছেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব, ওভার টেকিং, ওভার লোড, ওভার স্পিড ও অদক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালানোর কারণে সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। যাত্রী, চালক ও পথচারীদের জীবনের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রেখে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে রেখে গাড়ি চালাতে হবে। ট্রাফিক সাইন ও আইন মেনে গাড়ি চালালে সড়কে দুর্ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
আজ শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় নগরীর বাকলিয়াস্থ কর্ণফুলী নতুন ব্রীজ সংলগ্ন “রাজবাড়ি” কমিউনিটি সেন্টারে ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগ আয়োজিত সড়ক নিরাপত্তা ও সড়ক শৃঙ্খলা বিষয়ক বিভিন্ন পরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, মোটরযান আইন, ট্রাফিক সাইন ও ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশ মেনে গাড়ী চালাতে হবে। মাদক সেবন বা চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ী চালানো যাবেনা। যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা, সড়ক দখল করে গাড়ি পাকিং, অযথা হর্ণ বাজানো, একটানা ছয় ঘন্টার বেশি সময় ধওে গাড়ি টালানো, গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ও হেডফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, ধর্মীয় স্থাপনা ও দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকায় সাবধানে গাড়ি চালাতে হবে। শহর এলাকায় হাইড্রোলিক হর্ণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যাত্রী, পথচারী, সড়কের অব্যবস্থাপনা, ট্রাফিক নিয়মকানুন সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও সচেতনতাসহ আরও কিছু বিষয় দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। দুর্ঘটনা শূণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব না হলেও সচেতনতার মাধ্যমে কমিয়ে আনা সম্ভব।
উপ-পুলিশ কমিশনার এন.এম নাসিরুদ্দিন আরও বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যুবরণ বা পঙ্গুত্ববরণ তা কখনো আমাদের কাম্য নয়। নিরাপদ সড়ক উপহার দেয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব। হাইওয়ের তুলনায় শহরে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কম হলেও পুলিশের একার পক্ষে যানজট নিরসন, সড়ক দূর্ঘটনা রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আবার দুর্ঘটনার জন্য শুধু গাড়ির চালক-হেলপারদের দায়ী করলে হবেনা। যিনি গাড়ির মালিক তাকে এবং পথচারীদেরকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ার আগে ইঞ্জিন, ইঞ্জিন ওয়েল, ব্রেক, চাকা ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ ঠিক আছে কি না তা নিশ্চিত হতে হবে। নিজেরা সচেতন না হলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব নয়।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, ছাত্র-ছাত্রী, রাস্তা ব্যবহারকারী, সড়কে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে র্কা আগে কে যাবে এ ধরনের মনোভাব পরিহার করতে হবে। গাড়ি-চালক-হেলপারসহ সকলে সচেতন হলে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসলে দুর্ঘটনা অনেকটা হ্রাস পাবে। যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই তাদেরকে প্রশিক্ষণ শেষে লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাতে হবে। দুর্ঘটনা এড়াতে পথচারীদেরকে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে হবে।
সিএমপি ট্রাফিক-দক্ষিণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ রইছ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও টিআই (প্রশাসন) অনিল বিকাশ চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পরিবহন চালকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআই (বাকলিয়া) মোঃ আব্দুল মুকিত।
কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রামের সভাপতি মোহাম্মদ মুছা, চট্টগ্রাম অটো টেম্পু মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ মহিউদ্দিন, কোতোয়ালী-বাকলিয়া ট্রাক মালিক গ্রæপের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম দুলাল, চান্দগাঁও-বহদ্দার হাট অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহমদ হোসাইন, চট্টগ্রাম অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়িেনর সভাপতি মোঃ জাহেদ হোসেন প্রমূখ।
কর্মশালায় বাস, ট্রাক, টেম্পু, সিএনজি অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন পরিবহনের দুই শতাধিক চালক প্রাশক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন।
জেএন/কেকে