বোয়ালখালী প্রতিনিধি : শরৎ মানেই পূজার আমেজ। এতে ঢাকের বাদ্য না হলে কি জমে? কদিন বাদেই মণ্ডপে মণ্ডপে চলবে দুর্গা পূজা। সন্ধ্যায় হবে আরতি। আরতির অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে ঢাকের বাদ্য।
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে বায়না পড়ছে ঢুলিদের কাছে। তাই ঢাক-ঢোল মেরামতের জন্য কারিগরের বাড়িতে বাড়ছে ভিড়।
রবিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার বেশ কয়েকটি বাদ্যযন্ত্র মেরামতের দোকানে গিয়ে দেখা যায় কারিগরদের ব্যস্ততা। অন্যান্য বাদ্যযন্ত্রে চেয়ে এখন ঢাক-ঢোল মেরামত ও তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। বছরের অন্য সময়ের তুলনা দুর্গোৎসব উপলক্ষে ঢাক-ঢোলের মেরামত হয় বেশি।
ব্যস্ততা বেড়েছে ঠিক তবে আগের মতো সেই ব্যস্ততা নেই বলে জানালেন প্রবীণ ঢুলি চুলু দাস। সময়ের প্রয়োজনে অনেকেই পাল্টে নিয়েছে পূর্ব পুরুষের এ পেশা। হাতেগোনা কয়েকজন কারিগর এ ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। যারা এখনও কাজ করে যাচ্ছেন।
কথা হয় কারিগর সহদেব মণি দাসের সাথে। তিনি পৌরসভার গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় ৮ বছর ধরে বাদ্যযন্ত্র মেরামতের কাজ করছেন। তার বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার চাষাভাদ্রা গ্রামে। তার সাথে বাদ্যযন্ত্র মেরামতের কাজ করেন তারই ছোট ভাই জয়দেব দাস।
সহদেব মণি দাস বলেন, আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। ডিজে সাউণ্ডের কদর এখন ড়ায় পাড়ায়। তবে পূজা-পার্বনে এখনও ঢাক-ঢোলের কদর রয়েছে। পূজার আরতিতে ঢাক-ঢোলের কোনো বিকল্প নেই। তাই বছরের এ সময়টাতে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়।
জয়দেব দাস বলেন, পূজায় ঢাক-ঢোলের বাদ্য অপরিহার্য হলেও বর্তমানে সাউন্ড সিস্টেমের দাপট। কাঠ ও চামড়াসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বাড়ায় ঢাক-ঢোল মেরামতে খুব একটা লাভ হয় না। শুধু দুর্গাপূজা এলেই ঢাক-ঢোল, মৃদঙ্গের চাহিদা বেড়ে যায়।
তিনি জানান, কারিগররা সারাবছর তেমন কাজ পায় না। এছাড়া দুর্গাপূজা এলেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কাজ করে মৌসুমি কারিগররা। তাই অনেকে এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
কথা হয় কানুনগোপাড়া এলাকার যন্ত্র কারিগর কার্তিক মণির সাথে। তিনি বলেন, বর্তমানে সব কিছুর দাম বাড়তি।চামড়ার দাম, গাছের দাম ও কারিগরদের বেতন দিয়ে ব্যবসা কোনমতে টিকিয়ে রাখতে হিমশিম খেতে হয়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ঢুলিরা ঢাক মেরামত ও বানাতে আসছে। সবাই তাড়াতাড়ি নিতে চায়। তাই একটু ব্যস্ততা বেড়েছে।
জেএন/কেকে