চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের ডিসি মো. মমিনুর রহমানের কঠোর অবস্থান, জনগণ এবং রাষ্ট্রপক্ষে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করায় ঘোর বিপাকে পড়েছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল।
জেলা প্রশাসকের একের পর কঠোর অভিযান তাদের মাথা খারাপ করে দিচ্ছে। তাছাড়া সাধারণ জনগণের স্বার্থে সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু উন্নয়নমূখী কর্মকাণ্ডে ইষান্বিত এবং বারবার নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হওয়ায় ডিসিকে চট্টগ্রাম থেকে সরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে মহলটি।
আজ বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, কমান্ডার আবুল হাশেম।
চট্টগ্রামের সর্বস্তরের সুধি সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উত্তর দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাস।
সংবাদ সম্মেলনে আবুল হাশেম আরো বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের পর মূলত মুসলিম ধর্মীয় রীতি মেনে মোনাজাতে শামিল হয়েছিলেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মমিনুর রহমান। মোনাজাত পরিচালনাকারীর বক্তব্যের সঙ্গে জেলা প্রশাসক কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন।
তিনি বলেন, মূলত চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে বর্তমান জেলা প্রশাসকের সাহসী অবস্থান ও সরকারি উন্নয়নমূখী নানাবিধ কর্মকাণ্ডে নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হচ্ছেন স্বার্থান্বেষী মহলটি।
ফলে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল পরবর্তী একটি বিষয়কে পুঁজি করে ডিসির বিরুদ্ধে স্বার্থান্বেষী ও সংঘবদ্ধ একটি মহল মিথ্যা অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানকে চট্টগ্রাম থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে মেতেছে তারা।
জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানকে সৎ ও চট্টগ্রাম দরদি আখ্যায়িত করে বীর মুক্তিযোদ্ধা, কমান্ডার আবুল হাশেম আরও বলেন, বর্তমান ডিসিকে চট্টগ্রাম থেকে বদলি করা হলে চট্টগ্রামবাসীর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
লিখিত বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম বলেন, আমরা মনে করি, স্বার্থান্বেষী সব মহলের মিলিত চেষ্টার ফল হচ্ছে- একে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ এবং তাকে বিতর্কিত করে আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া।
আমরা জানতে পেরেছি, রিটার্নিং কর্মকর্তার পদ থেকে অব্যাহতির পর নতুন করে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতেছে স্বার্থান্বেষী মহল ও সংঘবদ্ধ চক্রটি। ওই গোষ্ঠী মিথ্যা সংবাদ প্রকাশসহ বিভিন্ন ভাবে তাঁকে বিতর্কিত করে চট্টগ্রাম থেকে বদলি করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ডিসির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি জেলা পরিষদের সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে পুনরায় তাঁকে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, আইবিএফবি সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, সম্পাদক প্রকৌশলী এসএম শহীদ উল আলম, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সিরাজউদ্দিন মো. আলমগীর, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি ডট কমের সম্পাদক অহিদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন একুশ পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল ওয়াহাব, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিস্তি, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, স্থপতি ও নগর পরিকল্পনাবিদ আশিক ইমরান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক রেজাউল করিম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য জাহেদুর রহমান সোহেল, চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু।
সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে উত্থাপিত দাবির সাথে একমত প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্যামল কুমার পালিত, সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার দেব, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি আশীষ কুমার ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন, স্কাউটস চট্টগ্রাম অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, ডা. মঈনুল ইসলাম চৌধুরীসহ বিশিষ্টজনেরা।
জেএন/পিআর