হাটহাজারী উপজেলা চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর ছেলেদের বিরুদ্ধে সরকারি রাস্তা দখল করে বসতঘর, পাকা গেট নির্মাণের সত্যতা পেয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে নিজ উদ্যোগে এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলার জন্য নোটিশ জারি করেছে স্থানীয় ভূমি প্রশাসন।
গতকাল (২০ সেপ্টেম্বর) উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) আবু রায়হান এ নোটিশ জারি করেছেন।
অভিযুক্তরা নিজ উদ্যোগে এবং বেঁধে সময়ের মধ্যে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলতে অস্বীকার বা সক্ষম না হলে উপজেলা ভূমি প্রশাসনের এসব অবৈধ স্থাপনা ভেঙে সরকারি খাস জমি পুনরুদ্ধারেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাবেক চেয়ারম্যান লিয়াকত আলীর ছেলে আবদুল্লাহ জোবায়ের বরাবরে জারি করা নোটিশে (স্মারক-১০৪৮, তারিখ-২০/৯/২২) বলা হয়, “যেহেতু আপনি নিম্ন তফসিলের (বিএস দাগ-১০৫) সরকারি জমি অবৈধভাবে ব্যবহার করছেন এবং এ কার্যালয়ের সার্ভেয়ার কর্তৃক অবৈধ দখলের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছেন, যেহেতু অন্যান্য সুত্র হতে প্রাপ্ত তথ্যাদি বিবেচনাক্রমে ‘দ্য গর্ভমেন্ট লোকাল অথরিটি ল্যান্ডস এন্ড বিল্ডিং (রিকোভারি প্রসেশন) অর্ডিন্যান্স ১৯৭০ এর ৩ ধারা/ ৪ ধারা/ ৫ ধারার ক্ষমতাবলে উক্ত জমি হতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সেহেতু অত্র নোটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের মধ্যে বর্ণিত ভূমি/ ইমারত বা তার অংশ বিশেষ ত্যাগ বা খালি এবং উক্ত ভূমির ওপর অবৈধভাবে নির্মিত অবকাঠামো অপসারণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। উক্ত সময়সীমার মধ্যে সরকারি খাস জায়গায় বিদ্যমান অবৈধস্থাপনা বা অবকাঠামো ভেঙে ফেলতে অস্বীকার করেন বা সক্ষম না হন অন্যথায় উক্ত অর্ডিন্যান্স এর ক্ষমতাবলে উক্ত অবৈধস্থাপনা বা অবকাঠামো ভেঙে অপসারণপূর্বক খাস জমির দখল গ্রহণ করা হবে।”
উপজেলার চিকনদণ্ডী ইউনিয়নের খন্দকিয়া গ্রামে জনসাধারণের চলাচলের সরকারি রাস্তা দখল করে স্থায়ী বসতঘর (আংশিক) ও পাকা গেট নির্মাণ, সরকারি জায়গা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার, যাতায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরির অভিযোগ ওঠে ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত লিয়াকত আলীর পরিবারের বিরুদ্ধে। সরকারি রাস্তায় পাকা গেট এ বসতঘর নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করায় দূরের বিকল্প রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সুত্র জানায়, প্রায় ২০ বছর আগে লিয়াকত আলী জীবিত থাকাকালে তার দুই ছেলে (আব্দুল্লাহ জোবায়ের ও আব্দুল্লাহ জুনায়ের) ও তার দুই ভাই (আবুল কাশেম ও আবুল হাশেম) রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সরকারি খাস খতিয়ানের ১০৫ দাগের জমিতে জনসাধারণের চলাচলের ৬০০ ফুটদৈর্ঘ্যের ও ১৮০ ফুট প্রস্থের রাস্তার বেশিরভাগ জায়গায় স্থায়ীভাবে পাকা গেট নির্মাণ করে দখল ও নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। ওইসময় ভুক্তভোগীরা প্রতিবাদ জানালেও তারা কারও কথা কানে তুলেনি। চলতি বছরের ২১ এপ্রিল এ বিষয়ের সুরাহা চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীদের একজন মোহাম্মদ এমরান৷
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার নিরুপম চাকমার তদন্ত প্রতিবেদনের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকনদণ্ডী সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত লিয়াকত আলীর ছেলেরা সরকারি রাস্তায় পাকা গেট ও বসতঘর নির্মাণ করে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছেন। তাদের পাশাপাশি আরও কিছু প্রতিবেশী সরকারি রাস্তা (বিএস দাগ ১৭৪) দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন৷ রাস্তাটির ব্যবহারকারী আশপাশের অনেক পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিকল্প পথে তারা হাঁটাচলা করতে বাধ্য হচ্ছেন৷
জেএন/এফও/কেকে