জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম থেকে: চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম যে বাংলাদেশ দলের লাকি গ্রাউন্ড তা আবারও প্রমাণ করলো টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৪৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৩৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটের জয় দিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করেছে মাশরাফি বাহিনী।
শুরুটা করেন লিটন-ইমরুল। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে ২৩.৫ ওভারে আসে ১৪৮ রান। এরপর সিকান্দার রাজার বলে ত্রিপানোর হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৮৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন লিটন। লিটনের আউটের পর উইকেটে আসেন রাব্বী। গত ম্যাচের ‘ধারাবাহিকতা’ ধরে রেখে কোন রান না করেই ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন তিনি।
রাব্বীর আউটের পর উইকেটে আসেন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। এরপর ইমরুলকে সাথে নিয়ে গড়েন ৫৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। দলীয় ২১১ রানে ইমরুল ৯০ রান করে সিকান্ডার রাজার বলে চিগুম্বুরাকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। ইমরুলের আউটের পর উইকেটে আসেন মোহাম্মদ মিঠুন। এরপর মিঠুনকে সাথে নিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন মুশফিক। মুশফিক ৪০ ও মোহাম্মদ মিঠুন ২৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
৭ উইকেটের এই জয় দিয়ে ২-০ তে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ আগামী ২৬ অক্টোবর একই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।
এরআগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৮ রানে তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের স্লোয়ারে মাসাকাদজার (১৪) ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। ১০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর তখন ১ উইকেটে ৫৭ রান।
অধিনায়ক মাসাকাদজার দ্রুত বিদায়ের পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেলর এবং সিফাস জুওয়াও। দুজনে মিলে গড়েন ৫২ রানের জুটি। ঘূর্ণিবলে জুওয়াওকে (২০) ফজলে মাহমুদের তালুবন্দি করে জুটি ভাঙেন মিরাজ। ১২ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৭০।
পরে ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে যোগ দেন শিন উইলিয়ামস। ২০ ওভার ৪ বলে একশ’ ছোঁয় জিম্বাবুয়ের স্কোর। তাদের ৭৭ রানের জুটির পর ৭৩ বলে ৯ চার ১ ছক্কায় ৭৫ রান করে টেলর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে দ্বিতীয় ওভারে জিম্বাবুয়ে শিবিরে ফের আঘাত হানেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। হাফসেঞ্চুরি থেকে তিন রান দূরে থাকতে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে বিদায় নেন শিন উইলিয়ামস। ৭৬ বলে দুটি চারে ৪৭ করে তিনি মুশফিককে ক্যাচ দেন।
মাত্র এক রানের জন্য হাফসেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হন সিকান্দার রাজা। তার এই আফসোসের কারণ মাশরাফি বিন মর্তুজা। বাংলাদেশ অধিনায়কের বলে ৬১ বলে ৩টি চার ও দুটি ছক্কায় ৪৯ করে বিদায় নেন রাজা। পরের ওভারেই মুস্তাফিজুর রহমানকে তুলে মারতে গিয়ে বিদায় নেন ১৭ রান করা পিটার মুর।
তারপর উইকেটে এসে সুবিধা করতে পারেনি এলটন চিগুম্বুরা। ৩ রান করা চিগুম্বুরাকে নাজমুল ইসলাম অপুর কাছে ক্যাচ বানিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এরপর আর কেউই উইকেটে দাঁড়াতে পারেননি। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ে সংগ্রহ করে ২৪৬ রান।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৪৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ পেসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দীন। এছাড়া মাশরাফি, মুস্তাফিজ, মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝুলিতে এসেছে ১টি করে উইকেট।
জয়নিউজ/জুলফিকার