শরতের আকাশ জুড়ে পেঁজা তুলোর মত মেঘ আর নদীর পাড়ে কাশফুলে জানান দিচ্ছে পূজা আসছে। চারিদিকে আগমনী আবহাওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ইউনেসকোর ইনট্যানজিবল হেরিটেজের স্বীকৃতি পাওয়া বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদোৎসব কড়া নাড়ছে দরজায়। আর কদিন পর মণ্ডপে দেখা মিলবে ১০ হাতে অস্ত্র সজ্জিত দেবীর। ঢাকের বাদ্যি আর ঝরা শিউলির সুবাসে ভেসে আসছে পুজোর গন্ধ। করোনার কারণে গতবছর সীমিত পরিসরে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও এবার জাকজমকভাবে উৎসব পালন করা যাবে বলে মনে করছেন আয়োজকরা।
মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, নগরের ১৬টি থানায় এবার ১৮২টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। এরমধ্যে প্রায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি থানা নেতৃবৃন্দের সাথে আলাদাভাবে বৈঠক করা হয়েছে। এসব বৈঠকে মহানগরের পক্ষ থেকে আয়োজকদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দুর্গাপূজায় আইন শৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং যানজট নিয়ন্ত্রণে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারও। আমরা নগরীতে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগরের সদরঘাট, এনায়েতবাজার, হাজারী লেন, রাজাপুর লেনসহ বেশ কয়েকটি স্থানে ঘুরে দেখা যায় মৃৎশিল্পীরা ব্যস্ত আরাধ্য দেবী দুর্গা প্রতিমা তৈরিতে। এর মধ্যে খড়, মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। শৈল্পিক কারুকার্য আর রঙ তুলির নিপুণ ছোঁয়ায় সেজে উঠছে অনিন্দ্য সুন্দর প্রতিমাগুলো।
এনায়েত বাজার এলাকার মৃৎশিল্পী বিশ্বজিত পাল বলেন, গত তিনমাস আগে দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছি। কাঠ, খড় ও মাটির কাজ শেষ। প্রতিমায় রঙের কাজ চলছে। এরপর শুরু হবে প্রতিমা সাজানো এবং অংলকার স্থাপনের কাজ। মহালয়ের পরেই আয়োজকরা মণ্ডপে প্রতিমা নেয়া শুরু করবেন। এর আগেই সব কাজ শেষ করতে হবে। এবার তিনি ১২টি প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেয়েছেন। এর মধ্যে ১০টি নগরীতে এবং বাকি দুটি প্রতিমা উপজেলায় নিয়ে যাওয়া হবে।
কথা হয় নগরের সদরঘাট কালীমন্দির মৃৎশিল্পী সুজন পাল। তার সঙ্গী হয়েছেন ছোট ভাই সুশান্ত পাল। মাটির কাজ শেষ হবার পর শুকাতে হবে। পূজার কয়েক দিন আগে রঙ দেওয়া শুরু করবো।
বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে, ১ অক্টোবর থেকে প্রতিটি মণ্ডপে পূজা শুরু হবে এবং ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে এই দুর্গোৎসবের।
জয়নিউজ/পিডি