ডেভিড মিলারের অসাধারন সেঞ্চুরিকে বৃথা করে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এক হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো ভারত।
আজ সিরিজের হাই-স্কোরিং দ্বিতয়ি ম্যাচে ভারত ১৬ রানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিতের পাশাপাশি ২-০ ব্যবধানে এগিয়েও গেল ভারত। ভারতের ২৩৭ রানের জবাবে ২২১ রান করে প্রোটিয়ারা। দু’দলই ৩টি করে উইকেট হারায়। মিলার ৪৭ বলে অনবদ্য ১০৬ রান করেন।
এই নিয়ে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ৯টি দ্বিপক্ষীয় সিরিজের মধ্যে ৮টিতেই জিতলো ভারত। ১টি ড্র হয়।
সিরিজে সমতা ফেরানোর লক্ষ্যে গৌহাটিতে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে নেমে পাওয়ার প্লেতে ৫৭ রান তোলেন রাহুল ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৯ ওভার শেষে ভারতের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৯৪তে। ১০ম ওভারে ভারতের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গেন স্পিনার কেশব মহারাজ। ৩৭ বলে ৪৩ রান করা রোহিতকে শিকার করেন তিনি। ৭টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন রোহিত।
রোহিত না পারলেও, ২৪ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২০তম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন রাহুল। হাফ-সেঞ্চুরির পর মহারাজের দ্বিতীয় শিকার হন রাহুল। ২৮ বল খেলে ৫টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন রাহুল।
দলীয় ১০৭ রানের মধ্যে ভারতের দুই ওপেনারের বিদায়ের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের উপর ঝড় বইয়ে দিয়েছেন বিরাট কোহলি ও সূর্যকুমার যাদব। ৪২ বলে ১০২ রান স্কোর বোর্ডে যোগ করেন এ জুটি। ১৮ বলে নবম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান সূর্য। শেষ পর্যন্ত ২২ বলে ৫টি করে চার-ছক্কা ৬১ রান করেন সূর্য।
শেষদিকে ৭ বল খেলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ১৭ রান তুলেন দিনেশ কার্তিক। অপরপ্রান্তে ২৮ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। তার ইনিংসে ৭টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। ফলে ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২৩৭ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়লো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার মহারাজ ২৩ রানে ২ উইকেট নেন।
২৩৮ রানের টার্গেটে দ্বিতীয় ওভারেই ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা ও রিলি রৌসুকে খালি হাতে বিদায় দেন ভারতের বাঁ-হাতি পেসার আর্শদীপ সিং। শুরুর ধাক্কা সামাল দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন কুইন্টন ডি কক ও আইডেন মার্করাম। ২৯ বলে ৪৬ রান তুলেন তারা। ১৯ বলে ৩৩ রান করে আউট হন মার্করাম।
৪৭ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর মহাচাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে দলকে লড়াইয়ে ফেরান ডি কক ও ডেভিড মিলার। চতুর্থ উইকেটে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন তারা। ভারতীয় বোলারদের তুলোধুনো করেছেন ডি কক ও মিলার। ১৬তম ওভারেই দলের রান দেড়শতে নিয়ে যান তারা। ২৫ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করেন মিলার। ৩৮ বলে অর্ধশতকের দেখা পান ডি কক।
তারপরও শেষ চার ওভারে ৮২ রানের দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। আর শেষ ওভারে জিততে ৩৭ রান প্রয়োজন ছিলো প্রোটিয়াদের।
অক্ষর প্যাটেলের করা শেষ ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান মিলার। এজন্য ৪৬ বল খেলেন তিনি। আর শেষ বলে ছক্কা মারেন ডি কক। শেষ ওভারে ২০ রান পাওয়ায় ম্যাচটি হারতে হয় প্রোটিয়াদের। ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ২২১ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় রান প্রোটিয়াদের।
চতুর্থ উইকেটে মিলার-ডি ককের ৮৪ বলে ১৭৪ রানের অবিচ্ছিন্ন দুর্দান্ত জুটিটি বৃথা যায়। তবে টি-টোয়েন্টিতে চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের বিশ্বরেকর্ড ।
৪৭ বলে ৮টি চার ও ৭টি ছক্কায় ১০৬ রানে অপরাজিত থাকেন মিলার। ৩টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪৮ বলে ৬৯ রানে অপরাজিত থাকেন ডি কক। ভারতের আর্শদীপ ৬২ রানে ২ উইকেট নেন।
আগামী ৪ অক্টোবর সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
জেএন/এও