লিবিয়ার পশ্চিম উপকূলের সাবরাথায় একটি শরণার্থী নৌকার ভেতর ও সৈকত থেকে অন্তত ১৫টি মরদেহ উদ্ধার করেছে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে বেশ কয়েকজনের দেহ পাওয়া গেছে আগুনে পোড়া অবস্থায়।
লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্টের একজন মুখপাত্র শুক্রবার (৭ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আগুনে বিধ্বস্ত নৌকাটির বিভিন্ন অংশ উপকূলীয় পাথরের ওপর ছড়িয়ে আছে। এর আশেপাশে লাশ পড়ে আছে।
মৃত্যুর কারণ তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়, কখন আগুন লেগেছিল জানা যায়নি সে তথ্যও। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে এসব ভিডিও ও ছবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানায় এপি।
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলি থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত সাবরাথা শহরটি। সেখানকার একটি নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, মৃত ব্যক্তিরা দুই প্রতিদ্বন্দ্বী পাচারকারী দলের বিবাদে আটকা পড়া অভিবাসনপ্রত্যাশী।
বিভিন্ন দেশের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা নিয়মিত লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা করে। অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিপজ্জনক এ সমুদ্রযাত্রার জন্য সাবরাথা একটি প্রধান লঞ্চিং পয়েন্ট।
অনলাইনে প্রকাশিত ভিডিও ও ছবিতে সমুদ্র সৈকতে একটি জ্বলন্ত নৌকা দেখা গেছে, যা থেকে গাঢ় ধোঁয়া বের হচ্ছে। বাকি ছবিতে সম্ভবত সেই নৌকার ভেতরেই দগ্ধ মানুষদের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এসব ভিডিও ও ছবির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
তাৎক্ষণিকভাবে তাদের মৃত্যুর কারণ ও আগুন কখন লেগেছিল সেটিও জানা যায়নি।
লিবিয়ার রেড ক্রিসেন্টের একজন মুখপাত্র তৌফিক আল শুকরি জানান, উদ্ধার করা লাশগুলো স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের মৃত্যুর কারণ জানার জন্য দেহাবশেষ পরীক্ষা করা হবে।
অভিবাসী ইস্যুতে কাজ করা একটি স্থানীয় লিবিয়ান এনজিও জানায়, এই ১৫ ব্যক্তিকে মানব পাচারকারীরা গুলি করে এবং তারপর জাহাজে আগুন ধরিয়ে দেয়। নৌকাটিতে ব্যাপক গুলি চালানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মানব পাচারকারীরা যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়ার বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে আর্থিকভাবে ফুলেফেঁপে উঠেছে। ছয়টি দেশের সঙ্গে মরুভূমির এই দেশটির দীর্ঘ সীমানা। যেখান দিয়ে অভিবাসীরা ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রপথে পাড়ি জমায়।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) গত জুন মাসে জানিয়েছিল, ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে লিবিয়া থেকে রওয়ানা হওয়া কমপক্ষে ১৫০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী নৌকা ডুবে মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেএন/পিআর