বাবর আজমের অধিনায়োকচিত ইনিংসে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে পাকিস্তান।
আজ টুর্নামেন্টের ও নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পাকিস্তান ৬ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডকে। গতকাল টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে ২১ রানে হারিয়েছিলো পাকিস্তান। আজ ব্যাট হাতে ৫৩ বলে অনবদ্য ৭৯ রান করে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন একবার জীবন পাওয়া বাবর। ম্যাচের সেরাও হয়েছেন তিনি।
ক্রাইস্টচার্চে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্বান্ত নেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। শুরুটা ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। উদ্বোধনী জুটিতে ১৬ রান আসে। ৩টি চারে দারুন শুরু করলেও, ৮ বলে ১৩ রান করে পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে বিদায় নেন ওপেনার ফিন অ্যালেন।
দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন আরেক ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও অধিনায়ক উইলিয়ামসন। পাওয়ার প্লেতে দলকে ৪২ রান এনে দেন তারা।
পাওয়ার-প্লে শেষ হবার পর ১৬ বল কোন বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি পায়নি নিউজিল্যান্ড। নবম ও দশম ওভারে ২টি ছক্কা মারেন কনওয়ে। তবে ১১তম ওভারের শেষ বলে কনওয়েকে শিকার করে পাকিস্তানকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন পাকিস্তানের স্পিনার মোহাম্মদ নাওয়াজ। ২টি করে চার-ছয় মেরে ৩৫ বলে ৩৬ রান করেন কনওয়ে। উইলিয়ামসনের সাথে ৫২ বলে ৬১ রানের জুটি গড়েন তিনি।
কনওয়ে ফেরার পর বিদায় নেন উইলিয়ামসনও। নাওয়াজের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ৩০ বলে ৩১ রান করা কিউই দলপতি ১টি মাত্র চার মারেন।
১৪ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের রান রেট টি-টোয়েন্টি মেজাজে ছিলো না। তাই ইনিংসের ১৫তম ওভারে নাওয়াজের উপর চড়াও হন মার্ক চাপম্যান। নাওয়াজের শেষ ওভারে ২টি করে চার-ছক্কায় ২২ রান তুলেন চাপম্যান। কিন্তু পরের দুই ওভারে আবারও রান গতি মন্থর হয় তাদের।
তাই ১৮ ওভার শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৩৭ রান। ১৯তম ওভারে ৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের বড় স্কোরের পথ বন্ধ করে দেন পাকিস্তানের পেসার হারিস রউফ।
দ্বিতীয় বলে জেমস নিশামকে ৫ ও তৃতীয় বলে মিচেল ব্রেসওয়েলকে খালি হাতে বিদায় করেন রউফ। আর শেষ বলে চাপম্যানকে থামান তিনি। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৬ বলে ৩২ রান করেন চাপম্যান। নিজের প্রথম ৩ ওভারে উইকেটশূন্য ছিলেন রউফ।
শেষদিকে রউফের তোপে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৭ রানের বেশি করতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ৪ ওভারে ২৮ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সফল বোলার রউফ। ২টি করে উইকেট ছিলো ওয়াসিম ও নাওয়াজের।
১৪৮ রানের টার্গেটে মারমুখী মেজাজে শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর। প্রথম চার ওভারে ৫টি চার মারেন তিনি। পঞ্চম ওভারে আকাশে ক্যাচ দিয়ে ২৭ রানে জীবন পান বাবর। তবে ঐ ওভারের পঞ্চম বলেই নিউজিল্যান্ডকে উইকেট উপহার দেন পেসার টিম সাউদি।
পাকিস্তানের রান মেশিন মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ব্যক্তিগত ৪ রানে লেগ বিফোর আউট করেন সাউদি।
দলীয় ৩৬ রানে রিজওয়ানের বিদায়ের পরের ওভারে খালি হাতে ফিরেন তিন নম্বরে নামা শান মাসুদ। নিউজিল্যান্ডকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন পেসার ব্লেয়ার টিকনার।
৩৭ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া পাকিস্তানকে জাগিয়ে তোলেন বাবর ও চার নম্বরে নামা শাদাব। অষ্টম ওভারে ১৬ রান তুলেন তারা। ১১তম ওভারে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ২৮তম ৩৩ বলে হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ন করেন বাবর।
১৩তম ওভারে দলের রান তিন অংকে পৌঁছে দিয়ে আউট হন শাদাব। টিকনারের দ্বিতীয় শিকার হবার আগে ২২ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৪ রান করেন তিনি। বাবরের সাথে তৃতীয় উইকেটে ৪২ বলে ৬১ রান যোগ করে দলকে জয়ের পথে রাখেন শাদাব।
শাদাব আউট হওয়ার সময় জয়ের জন্য ৪৬ বলে ৫০ রান দরকার ছিলো পাকিস্তানের। এরপর তাড়াহুড়া না করে দেখেশুনে খেলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ২৮ বলে ২৬ রান তুলেন বাবর ও নাওয়াজ। ১৭তম ওভারের শেষ বলে ব্যক্তিগত ১৬ রানে নাওয়াজকে শিকার করেন ট্রেন্ট বোল্ট। এতে শেষ ৩ ওভারে জিততে ২৪ রান দরকার পড়ে পাকিস্তানের।
টিকনারের করা ১৮তম ওভারে ২১ রান তুলে পাকিস্তানকে জয়ের দোড়গোড়ায় নিয়ে যান বাবর ও হায়দার আলি। বাবর ২টি চার ও নতুন ব্যাটার হায়দার ১টি করে চার-ছক্কা মারেন। আর ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে বাবরের বাউন্ডারিতে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত হয়।
১১টি চারে ৫৩ বলে অপরাজিত ৭৯ রান করেন বাবর। ২ বলে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন হায়দার।
আগামী ১১ অক্টোবর ফিরতি পর্বে আবারও নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান।
জেএন/এও