আজ থেকে চার বছর আগে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর। দিনটি শুরু হয়েছিল আর সাধারণ কয়েকটি সকালের মতোই। কিন্তু সকাল তার স্বাভাবিকতা ধরে রাখতে পারেনি। বেলা বাড়তেই খবর এলো- দেশীয় ব্যান্ডসংগীতের অন্যতম দিকপাল, গিটার জাদুকর ও এলআরবির প্রতিষ্ঠাতা আইয়ুব বাচ্চু নেই! রুপালি গিটার ফেলে চলে গেছেন, কিন্তু আজও আইয়ুব বাচ্চু প্রাণবন্ত হয়ে আছেন ভক্তদের হৃদয়ে।
মুহূর্তেই খবর ছড়িয়ে পড়লো সারাদেশে। শোকের সমুদ্রে ভেসে গেলো এ দেশের গানের আঙিনা। শোকাহত হয়ে পড়লেন শোবিজের সবাই। রুপালি গিটার ফেলে যাওয়া ‘এবি বস’ খ্যাত আইয়ুব বাচ্চুর ভক্তরা কেঁদে ভাসালেন বুক।
লোকে লোকারণ্য হয়েছিল এ কিংবদন্তির শেষ যাত্রায়। ঢাকা ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত বাচ্চুর জানাজায় লাখ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। এসেছিলেন অন্য ধর্মের মানুষেরাও, প্রিয় তারকাকে শেষ বিদায় জানাতে।
দেখতে দেখতে চার বছর হয়ে গেল সেই বিষাদে ভরা ১৮ অক্টোবরের। আজ আইয়ুব বাচ্চুর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী।
রুপালি গিটার ফেলে চলে গেছেন সবার প্রিয় ‘এবি বস’। কিন্তু আজও তিনি প্রাণবন্ত হয়ে আছেন ভক্তদের হৃদয়ে। আছেন রোজকার চর্চায়। এখনো শোনা যায় তার গান।
কয়েক প্রজন্মকে গানের বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
জনপ্রিয় ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক হিসেবে। তার হাত ধরে সমৃদ্ধ হয়েছে বাংলা ব্যান্ডজগৎ, এদেশের চলচ্চিত্রও পেয়েছে অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান।
১৯৭৮ সালে ‘ফিলিংস’ ব্যান্ডের মাধ্যমে গানের ভুবনে পথচলা শুরু করেন আইয়ুব বাচ্চু। এরপর ১০ বছর সোলস ব্যান্ডের লিড গিটারিস্ট হিসেবে কাজ করেন। নব্বইয়ের দশকে যাত্রা শুরু হয় ‘ব্যান্ডদল এলআরবি’র। এর দলনেতা ছিলেন তিনি।
দীর্ঘ কয়েক দশকে অসংখ্য কালজয়ী ও জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘চলো বদলে যাই,’ ‘হাসতে দেখো,’ ‘এখন অনেক রাত,’ ‘রুপালি গিটার’, ‘মেয়ে’ ‘আমি কষ্ট পেতে ভালোবাসি,’ ‘সুখের এ পৃথিবী,’ ‘ফেরারি মন,’ ‘উড়াল দেবো আকাশে,’ ‘বাংলাদেশ,’ ‘আমি বারো মাস তোমায় ভালোবাসি,’ ‘এক আকাশের তারা,’ ‘সেই তারা ভরা রাতে,’ ‘কবিতা,’ ‘তিন পুরুষ,’ ‘যেওনা চলে বন্ধু,’ ‘বেলা শেষে ফিরে এসে,’ ‘আমি তো প্রেমে পড়িনি’। গানগুলো এখনো সমান জনপ্রিয়।
জেন/এমআর