ফের তৃতীয় মেয়াদে চীনের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন শি জিনপিং। শনিবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় কমিউনিস্ট দল চায়না কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কংগ্রেস শেষ হয়েছে। কংগ্রেস শিকে আগামী ৫ বছরের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির সর্বোচ্চ ফোরাম পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির (পিএসসি) প্রধান হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে।
এ নিয়ে টানা তৃতীয় বারের মতো সিপিসির পলিটব্যুরো কমিটির প্রধানের পদে এলেন ৬৯ বছর বয়সী শি জিনপিং। এর মাধ্যমে মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে শক্তিশালি নেতার তালিকায় নাম লেকা হলো শির।
কমিউনিস্ট শাসিত চীনের সংবিধান অনুযায়ী, পার্টির ২৫ সদস্যবিশিষ্ট পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধানই দেশটির রাষ্ট্রপতি হন। শি জিনপিং তৃতীয় বারের মতো এই কমিটির প্রধান হওয়ায় নিশ্চিতভাবেই আরও ৫ বছর চীনের রাষ্ট্রপতি থাকছেন তিনি।
চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া সিনহুয়া জানিয়েছে, শনিবার পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধান নির্বাচিত হলেও এই কমিটির বাকি সদস্যরা নির্বাচিত হননি। রবিবার কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হবেন পলিটব্যুরো সদস্যরা।
এদিকে, আয়োজন শেষ হওয়ার আগেই সাবেক নেতা হু জিনতাওকে সম্মেলন থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে বের করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি সিসিপি।
বর্তমানে জেনারেল সেক্রেটারি হিসেবে ই চীনা কমিউনিস্ট পার্টির এক নম্বর নেতা, প্রেসিডেন্ট হিসেবে চীনের রাষ্ট্রপ্রধান ও কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে চীনা সেনাবাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার, এই তিনটি শীর্ষ ক্ষমতাধর পদ ধরে রেখেছেন শি জিনপিং।
১৯৫৩ সালের ১৫ জুন জন্ম গ্রহণ করেন শি জিনপিং। তার বাবা শি জোংশুন ছিলেন সিপিসির প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান ও শীর্ষ নেতা মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট গেরিলা আন্দোলনের অন্যতম নেতা। পরবর্তীতে তিনি কমিউনিস্ট সরকারের উপপ্রধানও হন।
বাবার পথ ধরে ১৯৭১ সালে ১৮ বছর বয়সে সিপিসির অঙ্গসংগঠন কমিউনিস্ট ইউথ লীগে যোগ দেন শি জিনপিং। চার বছর ইউথ লীগ করার পর ১৯৭৫ সালে মূল পার্টি সিপিসির সদস্যপদ পান তিনি। এরপর ধীরে ধীরে পার্টির আঞ্চলিক শাখা প্রধান, সিপিসির দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যপদ এবং অবশেষে দেশটির রাষ্ট্রপতি হন তিনি।
শি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মূলত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিচিতি পায় চীন। ক্ষমতায় আসার পর অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সংস্কারের পাশাপাশি সিপিসিকে শক্তিশালী করতেও বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি।
লন্ডন ইউনিভার্সিটির এসওএএস চায়না ইনস্টিটিউটের পরিচালক স্টিভ সাং বলেছেন, ‘শির ক্ষমতা চীনের স্বৈরশাসকের মতোই হবে, এবং তাকে কোর্স সংশোধনের চেষ্টা করার পরামর্শ দেওয়ার সুযোগ কারোরই থাকবে না।’
পলিটব্যুরোর স্থায়ী কমিটির একজন সম্ভাব্য উত্তরসূরিকে শি নিযুক্ত করবেন কিনা সেটিই হল গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। রবিবার স্থায়ী কমিটি উন্মোচন হলে এর উত্তর পাওয়া যাবে।
জেএন/এমআর