চট্টগ্রাম নগরের জামালখানে ৭বছরের শিশু মারজানা হক বর্ষাকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোদ্ধ করে হত্যা করে স্থানীয় দোকানদার লক্ষণ দাস। পরে সে তার গোডাউনে রাখা টিসিবি’র সীলযুক্ত প্লাস্টিকের বস্তার ভেতরে মৃতদেহ ঢুকিয়ে গোডাউনের পাশে ড্রেনে ফেলে দেয়। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার লক্ষণ দাসের উদ্বৃতি দিয়ে পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছেন।
আজ ২৮ আগষ্ট রাত দেড়টায় কোতোয়ালি থানার জামালখানের শ্যামল ষ্টোর থেকে নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত লক্ষণ দাসকে গ্রেফতার করে।
লক্ষণ দাশ (৩০) লোহাগাড়া উপজেলার উত্তর পদুয়া ৩নং ওয়ার্ডের মনি মিস্ত্রির বাড়ির ফেলোরাম দাসের সন্তান।
গত ২৭ অক্টোবর বিকালে জামালখান লিচু বাগান সিকদার হোটেলের পিছনে ড্রেনের উপর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানার মামলা নং-৪৯ দায়ের করেন নিহত বর্ষার বোন।
উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মারজানা হক বর্ষা গত ২৪ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৪ টায় জামালখান লিচু বাগানস্থ সিকদার হোটেলের পাশের গলির বাসা থেকে চিপস কেনার জন্য গলির মুখে দোকানে যায়। দেড় ঘন্টা পরও শিশুটি বাসায় না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা আশপাশ এলাকা সহ সম্ভাব্য স্থানে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করে। খোঁজ না পেয়ে পরদিন তার বোন ছালেহা আক্তার রুবী থানায় একটি নিঁখোজ ডায়েরী করেন।
এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহসহ করে।
তিনি বলেন, মৃতদেহ ড্রেনে পাওয়ার পর যখন বস্তা কেটে মৃতদেহটি বের করা হয় তখন আমাদের নজরে আসে বস্তাতে টিসিবি’র সীল আছে। সেই টিসিবি’র সীলকে টার্গেট করে এমন টিসিবি’র সীলযুক্ত বস্তায় মালামাল বিক্রির দোকান ও আশেপাশের বিভিন্ন রেস্তোরার গোডাউনে টিসিবি’র সীলযুক্ত বস্তা খুঁজতে থাকে পুলিশ । একপর্যায়ে শ্যামল ষ্টোর দোকানের গোডাউন চেক করার সময় একটি ইনটেক খালি টিসিবি’র সীলযুক্ত বস্তা খুঁজে পাওয়া যায়। টিসিবির সীলযুক্ত বস্তাকে টার্গেট করে উক্ত দোকানে মালিক ও কোন কোন কর্মচারী কাজ করে তাদের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ঘটনাস্থলের আশেপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। টিসিবির সীলযুক্ত বস্তা ও সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনায় লক্ষণ দাসকে শনাক্ত করে শ্যামল ষ্টোরে অভিযান চালিয়ে তাকে ধরা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লক্ষণ স্বীকার করেছে, মারজানা হক বর্ষাকে সে বিভিন্ন সময়ে দোকান থেকে চিপস, চকলেট দিত। ঘটনার দিন সে ভিকটিমকে ১০০ টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে দোকানের গোডাউনে নিয়ে যায়। গোডাউনে নেওয়ার পর গোডাউনের ভেতরে থাকা চৌকিতে বসিয়ে ভিকটিমের কাপড়চোপড় খুলে ফ্লোরে থাকা পেঁয়াজের খোসার উপর রাখে। পরে সে ভিকটিমকে চৌকিতে মুখ এবং নাক চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণকালে যৌনাঙ্গ থেকে রক্তপাত হওয়ায় দ লক্ষণ দাশ ভয় পেয়ে তার মুখ এবং নাক চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে সে তার গোডাউনে রাখা টিসিবি’র সীলযুক্ত প্লাস্টিকের বস্তার ভেতরে মৃতদেহ ঢুকায়। বস্তাবন্দি মৃতদেহটি সে বাইরে এনে গোডাউনের ডান পাশে দেওয়াল সংলগ্ন ড্রেনে দেওয়ালের উপর দিয়ে ফেলে দেয়। এর কিছুক্ষণ পরে সে কাপড়চোপড় পেঁয়াজের খোসার বস্তার ভেতর খোসাসহ ঢুকিয়ে বস্তাটি একই জায়গায় ফেলে দেয়। আরো কিছুক্ষণ পরে সে ভিকটিমের ব্যবহৃত স্যান্ডেলটি নিয়ে ড্রেনে ফেলে দেয়।
জেএন/এফও/এমআর