সীমান্তে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির বিষয়ে বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার। এ নিয়ে আগামীকাল রবিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১০টায় কক্সবাজারের টেকনাফে সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাথে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শেখ খালিদ বলেন, ‘গত আড়াই মাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে বাংলাদেশ সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন।
সীমান্তের এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকে দু’দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। একাধিকবার বিজিপির কাছে চিঠি পাঠানোও হয়েছে। এর কারণে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে।’
তবে পতাকা বৈঠকে সীমান্তের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার তথ্য জানালেও এতে আরো কী কী বিষয়ে আলোচনা হবে এবং দু’দেশের কতজন সদস্য অংশ নেবেন তা বিস্তারিত জানাননি বিজিবির এই কর্মকর্তা।
লে. কর্নেল খালিদ জানান, সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে বিজিবি কড়া নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
প্রসঙ্গত, সীমান্তে উত্তেজনার রেশ শুরু হয় চলতি বছরের আগস্টে। প্রথমে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণ। এর মধ্যে ২৮ আগস্ট মিয়ানমারে ছোড়া দুটি মর্টার শেল এসে পড়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। তবে বিস্ফোরিত না হওয়ায় কেউ হতাহত হয়নি।
এরপর ৩ সেপ্টেম্বর, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধ বিমান থেকে ছোঁড়া আরও দুটি মর্টার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়ে। একইদিন বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষে উড়ে যায় মিয়ানমারের যুদ্ধ বিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার। যার কারণে সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে বাড়ে আতঙ্ক। এরপর আরও কয়েকবার সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটিয়েছে মিয়ানমারের বিজিপি।
সবশেষ গত ২৩ অক্টোবর নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে নতুন করে শুরু হয় ব্যাপক গোলাগুলি ও গোলা বর্ষণ। যা দু’দিন থেমে থেমে অব্যাহত থাকে। তবে এরপর থেকে আর শোনা যায়নি গোলাগুলির শব্দ।
এই উত্তেজনা কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর এবার মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে চলমান সংঘাতের প্রেক্ষিতে অবশেষে ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে সম্মত হয় দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি।
জেএন/পিআর