ভারতের গুজরাট রাজ্যের মৌরবি ঝুলন্ত ব্রিজ ভেঙে পড়ার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরো বেড়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৪১ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে এ ঘটনায় সেতুটির মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান ওরেভা গ্রুপের দুই ম্যানেজার, দুই টিকিট সংগ্রহকারী, দুজন ঠিকাদার ও ভিড় নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা তিন নিরাপত্তারক্ষীসহ মোট নয় ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গুজরাট পুলিশের রাজকোট রেঞ্জের ইনস্পেক্টর জেনারেল (আইজি) অশোক যাদব সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় এফআইআর দায়েরের পর গাফিলতির জন্য নয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে গুজরাটের মরবি জেলার মাচ্চু নদীতে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঐতিহাসিক ওই ঝুলন্ত সেতু ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
এ পর্যন্ত ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরো অনেকে নিখোঁজ রয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
একটি বেসরকারি সংস্থা এটির মেরামতের কাজের দায়িত্বে ছিল। সংস্কারের পর ব্রিজটি চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। এটি দেখতে মানুষ ভিড় জমায়। ঘটনার সময় ওই ব্রিজটির ওপর চার শতাধিক মানুষ ছিলেন। তাদের নিয়েই ব্রিজটি খুলে দেয়ার চারদিনের মাথায় এ দুর্ঘটনা ঘটল।
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য দুই লাখ রুপি ও প্রত্যেক আহত ব্যক্তিকে ৫০ হাজার রুপি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
সেতুটি মেরামতের পর চারদিন আগে গত ২৬ অক্টোবর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি বা এর ফিটনেস সনদ নেয়া হয়নি। স্থানীয় মিনিউসিপ্যাল প্রধান সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন।
গুজরাটের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী ব্রিজেশ মেরজা বলেন, গত সপ্তাহেই সেতুটির সংস্কার কাজ শেষ হয়। ২৬ তারিখ জনসাধারণের চলাচলের জন্য এটি খুলে দেয়া হয়। দুর্ঘটনাটি কেন ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, ২৩০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি উপনিবেশিক আমলের। ১৯ শতকে ভারতে ব্রিটিশ শাসনামলে এটি তৈরি করা হয়েছিল। ইন্ডিয়া টুডে টিভির সাথে আলাপচারিতায় মিউনিসিপ্যাল চিফ অফিসার সন্দীপ সিং জানান, সেতুটিকে ‘ফিটনেস সার্টিফিকেট’ দেয়া হয়নি। ওই কোম্পানির অসাবধানতার কারণে গতকাল এ ঘটনা ঘটেছে।
জেএন/পিআর