চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বছরের পর বছর অনাবাদি পড়ে রয়েছে শতশত হেক্টর আবাদযোগ্য জমি। পৌর সদরের ছন্দারিয়া খালের উত্তর পাড়ে আকুবদণ্ডী অংশের হদের বিলে গত এক দশক আগেও চাষ হতো। একই ভাবে কধুরখীলের মাঝের বিল ও হাটখোলা বিলে চাষ হতো আমন ধানের। আমন উঠে যাওয়ার পর নানা জাতের ডাল ও শীতকালীন শাক সবজিতে ভরে উঠতো এসব বিল। এখন কোনো চাষ হয় না। বিলগুলো কচুরিপানা আর হোগলাপাতায় ভরে গেছে।
স্থানীয় কৃষক সুধীর দে জানান, হদের বিলে প্রায় ১০ বছর ধরে চাষ হচ্ছে না। জমির মালিকরাও চাষে আগ্রহী না হওয়ায় অনাবাদী পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর। বেদখলের ভয়ে বা আইনি জটিলতায় বর্গা দিতেও চান না জমির মালিকরা।
হাটখোলা বিলের চাষী প্রকাশ চৌধুরী ভোলা বলেন, চাষের জন্য পাওয়াটিলার পাওয়া যায় না। ইচ্ছে থাকলেও দীর্ঘদিন যাবৎ এ জমিতে চাষ করা যাচ্ছে না।
এ জন্য অনেক কৃষক চাষে খরচ বেশি ও জলাবদ্ধতাকে দায়ী করছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ বলছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সুইচ গেইট, খাল খনন ও পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা নিলেই চাষের আওতায় আসবে এসব জমি।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন বলেন, চাষযোগ্য জমি অনাবাদি ফেলে রাখা যাবে না। জমির শ্রেণি অনুযায়ী ফসল চাষ করা যায়। জলাবদ্ধতা থাকলে মাছ চাষও করা যায়। চাষে এখন অনেক বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। এসব আধুনিক চাষাবাদের নানান পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে।
তিনি জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর এ ব্যাপারে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় দেশের আবাদযোগ্য সব জমি আবাদের আওতায় আনার বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে, “জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কোনো জমিই আবাদের বাইরে রাখা যাবে না।”
ইউএনও বলেন, কোনো কৃষি জমি পরপর ৩ বছর অনাবাদি থাকলে বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার বিধান রয়েছে। কোনো ব্যক্তি তার জমি কৃষি কাজে ব্যবহার না করে পতিত রাখলে উক্ত জমি রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ এর ৯২ (১)(গ) ধারা মোতাবেক খাস করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ সংক্রান্ত আদেশ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।
ফলে উপজেলায় অতিসত্ত্বর এ বিষয়ে কাজ শুরু করার কথা জানালেন ইউএনও মোহাম্মদ মামুন।
বোয়ালখালী পৌরসভার মেয়র মো. জহুরুল ইসলাম জহুর বলেন, আবাদযোগ্য জমি চাষের আওতায় আনতে জনসচেতনতা সৃষ্টির বিকল্প নেই। বিদ্যমান আইন সর্ম্পকে জানলে জমির মালিকরা তাদের জায়গা পতিত করে রাখবে না।
জেএন/এমআর