বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সরকারের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা প্রক্রিয়ার শেষে এই ঋণ দিতে যাচ্ছে আইএমএফ।
আইএমএফের কাছ থেকে ঋণের বিষয়ে বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের কাছে নানা তথ্য তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেভাবে ঋণ চেয়েছিলাম ঠিক সেভাবেই পেতে যাচ্ছি। আগামী ৩ মাসের মধ্যে এই ঋণের বিষয়ে সব প্রক্রিয়া শেষ হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার চেয়েছি সেটা মোট ৭ কিস্তিতে পাওয়া যাবে।’
সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও বাজেট সহায়তার জন্য দেড় বিলিয়ন করে ৩ বিলিয়ন ডলার চেয়েছে। বাকি দেড় বিলিয়ন চাওয়া হয়েছে আইএমএফের নতুন উদ্যোগ, সহনশীলতা ও টেকসই সহায়তা তহবিল (ট্রাস্ট) থেকে।
এই ঋণের জন্য আইএমএফ বাংলাদেশকে বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে। আইএমএফ যেসব সংস্কার কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেওয়ার সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো, করপোরেট সুশাসন আরও বলিষ্ঠ করা, বর্তমান অবকাঠামোর ওপর তদারকি আরও কঠোর করা ও এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা, ঋণদাতাদের অধিকার প্রয়োগের জন্য আরও বলিষ্ঠ সহযোগিতা ও ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিতের জন্য আইনি ব্যবস্থার যথোপযুক্ত সংস্কার।
ঢাকা সফররত মিশন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার এবং আইএমএফ কর্মকর্তারা এ বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছেন। মিশন বাংলাদেশের ঋণের বিষয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করে আইএমএফের নির্বাহী পরিশোধে উপস্থাপন করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আইএমএফের এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি ( ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি থেকে ৩২০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় ১৩০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার বিষয়ে কর্মকর্তা পর্যায়ে তারা একমত হয়েছেন। এ ঋণের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখা এবং অসুবিধাগ্রস্ত মানুষকে রক্ষা করে শক্তিশালী, অর্ন্তভুক্তিমূলক এবং সবুজ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করা। ৪২ মাস ধরে বিভিন্ন কিস্তিতে এ ঋণ দেয়া হবে।
গত জুলাই মাসে আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। ঢাকায় আইএমএফ মিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দ।
গত ২৪ জুলাই ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে আইএমএফকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। ঋণ দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে আইএমএফ’র একটি প্রতিনিধি দল ২৬ অক্টোবর ঢাকায় আসে।
জেএন/এমআর