কাতার ২০২২ বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় অঘটনটি ঘটিয়ে ফেলেছে সৌদি আরব। ৩৬ ম্যাচের একটিতেও না হারা অপরাজিতের উচ্ছাসে উড়তে থাকা মেসির আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই মাটিতে নামাল সৌদি আরব।
২০২২ আসরে হট ফেভারিট লিওনেল মেসিদের ২-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে পুচকে দলটি। স্বাভাবিকভাবে আলোচনায় উঠে এসেছেন নার্ভাস আর্জেন্টিনা এবং চমকে দেয়া সৌদির ফুটবলাররা। বিশেষ করে গোলকিপার আল-ওয়াইস।
এরই মাঝে আলো কেড়েছেন রেফারি স্লাভকো ভিনসিচ। তার সিদ্ধান্তে বাতিল হয় তিনটি গোল। অফসাইডের কারণে সেসব গোল বঞ্চিত হয় আর্জেন্টিনা।
এছাড়া নানা মুহূর্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অনেক সমালোচক বলছেন, এই ম্যাচে সৌদির পক্ষে তার সমর্থন ছিল! ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইউরোপিয়ান দেশ স্লোভেনিয়ায় জন্ম ও বেড়ে ওঠেন ভিনসিচ। দেশটির ফুটবলে অন্যতম সেরা রেফারি হিসেবে স্বীকৃত তিনি। ২০১০ সাল থেকে ফিফা ম্যাচে রেফারির দায়িত্ব পালন করছেন ৪২ বছর বয়সী এই ব্যক্তিত্ব।
শুধু বিশ্বকাপ নয়, গত ইউরোপা লিগের ফাইনাল ম্যাচও পরিচালনা করেন ভিনসিচ। এছাড়া ২০১৬ ও ২০২১ ইউরোর বাছাইপর্বের খেলা পরিচালনা করেন। পথিমধ্যে হঠাৎ সংবাদের শিরোনাম হন তিনি। তবে মাঠের কোনও কীর্তিতে নয়, বাইরের ঘটনায়।
২০২০ সালে বসনিয়ার বিয়েইনা শহরের একটি কেবিন থেকে ভিনসিচকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মাদক, অস্ত্র চোরাচালান ও যৌনকর্মী চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
সেসময় সেই কেবিনে তল্লাশি চালিয়ে ১৪ প্যাকেট কোকেন, ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৩টি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট এবং ১০ হাজার ইউরো জব্দ করে পুলিশ। সেই সঙ্গে ৯ নারী ও ২৬ পুরুষকে উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় নৌকায় তিনজনকে নিয়ে দ্রিনা নদী দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন ভিনসিচ। তবে পরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
তদন্তে উঠে আসে, এই চক্রের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ছিল না ভিনসিচের। মূলত সার্বিয়ান মডেল তিয়ানা মাকসিমোভিচের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার সন্দেহে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিয়ানার বিরুদ্ধে মধু চক্র চালানোর অভিযোগ ছিল।
পরে ভিনসিচ বলেন, পুলিশ আমাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে স্পষ্ট হয়, ওই চক্রের সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। ফলে আমাকে ছেড়ে দেয়। এটা আমার জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল ছিল।
ভুল সময়, ভুল জায়গায় ছিলেন ভিনসিচ। এতে তার গায়ে কালো দাগ লেগেছিল। ফলে তার রেফারিং ক্যারিয়ারের ইতি ঘটতে পারতো। কিন্তু সেটা হয়নি।
জেএন/পিআর