প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়।
২৬-২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় ১৮তম বার্ষিক সম্মেলন ও বৈজ্ঞানিক সেমিনার ২০২২ উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের তৃণমূল জনগণের জন্য সহজলভ্য ও বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬-২০০১ সময়কালে তার সরকার প্রতিটি গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছিল। তিনি বলেন, বিএনপি ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয় এবং এর ফলে গ্রামের মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়।
তিনি বলেন, ‘প্রতিস্থাপনের জন্য অঙ্গ সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং আইনানুগ ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমরা ‘মানব অঙ্গ প্রতিস্থাপন আইন, ১৯৯৯’ প্রণয়ন করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ওই আইনে আমরা মানবদেহের কিডনি, হার্ট, ফুসফুস, অন্ত্র, লিভার, অগ্ন্যাশয়, হাড়, মজ্জা, চোখ, ত্বক ও টিস্যুসহ যেকোন অঙ্গ বা অঙ্গ প্রতিস্থাপনের বিধান রেখেছি। মৃত ব্যক্তির ক্ষেত্রে যে কোন আইনি উত্তরাধিকারীর লিখিত অনুমতি সাপেক্ষে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গ্রহণ করা যাবে।
তিনি বলেন, এর ফলে স্বেচ্ছায় অঙ্গ দানসহ মরণোত্তর অঙ্গদানের সমস্ত আইনি জটিলতার সমাধান হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পরে ২০১৮ সালে ১নং ধারার মাধ্যমে আমরা পূর্ববর্তী আইনসমূহ হালনাগাদ করেছি এবং ‘মানব অঙ্গ প্রতিস্থাপন (সংশোধন) আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করেছি।
এছাড়া, আমরা সংশোধিত আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধের তদন্ত, বিচার, আপিল ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর জন্য বিধান সংযুক্ত করেছি।
তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী গত ১৪ বছরে আমরা স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ভূমিধস বিজয়ে নির্বাচিত হওয়ার পর এবং টানা তিনবার, আমরা জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থা পুনরায় চালু করেছি।’
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা প্রায় ১৮,৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র খুলেছি, যেখানে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, তার সরকার ‘জাতীয় স্বাস্থ্য নীতি-২০১১’ প্রণয়ন করেছে এবং ‘সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা’ অর্জনকে অগ্রাধিকার দিয়ে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সারাদেশে নতুন হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করেছে, যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ পরীক্ষা করা যাবে এবং জটিলতা প্রতিরোধে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, ‘ডায়ালাইসিস জনগণের ওপর যে বোঝা তৈরি করে তা বিবেচনা করে আমরা ডায়ালাইসিসের মাধ্যমে কিডনি ফেইলিউরের চিকিৎসার জন্য একটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ স্থাপন করেছি। আমরা মৃত ব্যক্তির কিডনি প্রতিস্থাপন শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থাও নিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আনন্দিত যে কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ নেফ্রোলজি (আইএসএন)-এর সিস্টার রেনাল সেন্টার (এসআরসি) প্রোগ্রাম হিসাবে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল লন্ডন হাসপাতালের সহযোগিতায় তার ১৮তম বার্ষিক কনভেনশন এবং বৈজ্ঞানিক সেমিনার আয়োজন করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি জেনে আনন্দিত যে নেপালের ডাক্তার ও নার্সরাও সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন। আমি অংশগ্রহণকারীদের শুভেচ্ছা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে মত ও ধারণা বিনিময় হবে যা আমাদের দেশে কিডনি রোগের ব্যবস্থাপনার উন্নতি ঘটাবে।
তিনি সম্মেলনের সফলতা কামনা করেন।
জেএন/এমআর