কক্সবাজারে আদালতের রায় ঘোষণার দিন পলাতক থাকা আরও ৩৬ ইয়াবা কারবারি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার দায়রা ও জেলা জজ আদালতের বিচারক বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত বর্জন করায় আইনজীবী ছাড়াই আসামিরা নিজেরা আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানিয়েছেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।
এর আগে সোমবার আরও ৯ জন আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তাদেরও কারাগারে পাঠিয়েছিলেন আদালত। তবে মঙ্গলবার তারা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) মো. শাহ আলম খান।
পিপি ফরিদুল আলম বলেন, কারাগারে পাঠানো আসামিরা দ্রুত মুক্তি পাচ্ছেন। শুরুতে আসামিদের হাজতবাস সাজার অধীনে হওয়ায় নতুন করে সাজা ভোগ করতে হচ্ছে না কারো। সাজাপ্রাপ্ত প্রতি আসামি দুই বছরের কাছাকাছি হাজত বাস করেছেন। প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ঘোষিত ২০ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ করলেই তাদের কারাগার থেকে মুক্তি মিলছে।
আইনজীবীদের জেলা জজ আদালত বর্জন কর্মসূচির মধ্যেই কী প্রক্রিয়ায় এসব আসামিরা আত্মসমর্পণ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে পিপি বলেন, আসামিরা সরাসরি আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করেছেন। বিচারক প্রতিদিন আদালত করছেন।
আত্মসমর্পণের পর ৯ আসামির মুক্তির বিষয়ে কারাগারের সুপার মো. শাহ আলম বলেন, এ নিয়ে ১০১ জনের মধ্যে ২৬ জন কারামুক্ত হয়েছেন। এর আগে কারাগারে থাকা ১৭ আসামিকে রোববার ও সোমবার পৃথকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। আদালত থেকে খালাস দেয়ার আদেশ পাওয়ার পর পর্যায়ক্রমে এদের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তবে এ মামলার আসামি মোহাম্মদ হোছাইন অন্য একটি হত্যা মামলায় কারাগারে আছেন।
২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে ১০২ জন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি ও গডফাদার সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা, ৩০ টি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিনই তাদের বিরুদ্ধে টেকনাফ মডেল থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা হয়। সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়।
বিচার কার্যক্রম চলাকালে ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি ১০১ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। চলতি বছরের ২৩ নভেম্বর কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল ১০১ জনের দেড় বছরের কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। একই সঙ্গে অস্ত্র মামলায় সবাইকে খালাসের আদেশ দেন।
জেএন/এমআর