চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী নুরনবী ওরফে ম্যাক্সন ভারতের কলকাতায় নিহত বলে খবর পাওয়া গেছে। তমাল চৌধুরী ছদ্মনামে কলকাতায় অবস্থান করছিল ম্যাক্সন। গত মঙ্গলবার কলকাতায় মৃত্যু হয় শীর্ষ ছাত্রশিবির ক্যাডার নাসিরের সহযোগী ম্যাক্সন। তার বিরুদ্ধে ৫টি অস্ত্র মামলা ও ১৭টি চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে।
ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে কলকাতা পুলিশ ধারণা করছে। বর্তমানে লাশটি কলকাতার এম.আর বঙ্গালুর হাসপাতালে রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ ব্যাপারে বাংলাদেশের পুলিশ থেকে এখনও কোনো কিছু নিশ্চিত করা হয়নি। তবে বাংলাদেশে অবস্থান করা তার স্ত্রীরফারজানা আকতারের দাবি, আজকে ভোররাত ৩টার দিকে ম্যাক্সনের মোবাইলে ফোন করলে হাসপাতালের একজন ডাক্তার ফোন রিসিভ করেন। তিনি জানান, অর্পিতা নামক একজন নারী ম্যাক্সনকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে গেছে। ওই নারীর ঠিকানা ভুয়া। হাসপাতালটির অবস্থান ছাব্বিশ পরগণা এলাকায় বললেন। ওই ডাক্তারই আমাদের কাছে ম্যাক্সনের ছবি পাঠান এবং বলেন ম্যাক্সনকে খুন করা হয়েছে, এটি আত্মহত্যা নয়।’
ম্যাক্সনের স্ত্রী ফারজানা আকতার বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার ম্যাক্সন আমাকে ফোন করে বলেন অর্পিতা টাকার জন্য ঝামেলা করছে। টাকার জন্য প্রেশার দিচ্ছে। অর্পিতাকে দেয়ার জন্য এর আগে অনেক টাকা আমরা পাঠিয়েছিলাম, জায়গা পর্যন্ত বিক্রি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ম্যাক্সনকে তখন বলেছি, অর্পিতার কাছ থেকে সরে গেলে তো হয়। তখন বলে, সরলে এখানে আমাকে আশ্রয় দেবে কে? এখানে সবাই আমার অচেনা। এরপর রাতে ফোন করে বলে তারা তো আমাকে মেরে ফেলবে মনে হয়। অর্পিতার সাথে ম্যাক্সনের ভাই কথা বলে গতকাল রাতে। তখন সে বলে টাকা পাঠাতে। কিছুক্ষণ পর অর্পিতা কল করে জানায় টাকা না থাকায় হতাশা থেকে ম্যাক্সন আত্মহত্যা করেছে।
চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানাধীন জাহানপুর আলতাফ মিয়া বাড়ির আবদুল লতিফের ছেলে ম্যাক্সন। ২০১৭ সালে জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে সে পালিয়ে যান কাতারে। সেখান থেকে দেশে ফিরে ২০২০ সালে ফের গ্রেফতার হন সারোয়ার। তখন থেকেই ম্যাক্সনের অবস্থান নিয়ে সৃষ্টি হয় ধোঁয়াশা। তিনি দেশে ফিরেছেন, নাকি অন্য কোথাও পালিয়েছেন? পুলিশের কাছে এতদিন এ প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর ছিল না, তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাক্সনের সন্ধান মেলে।
২০১১ সালের ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ম্যাক্সন একে-৪৭-এর মতো অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ গ্রেফতারও হয়েছিলেন। চলতি বছরেই ভারতের কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) তালিকাভুক্ত এ শীর্ষ সন্ত্রাসী। কলকাতার উপকণ্ঠে ডানলপ এলাকায় ভাড়া করা ফ্ল্যাট থেকে ম্যাক্সনকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তমাল চৌধুরী ছদ্মনামে তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন। নিজেকে পরিচয় দিতেন মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে।
জেএন/এফও/এমআর