হাইকোর্ট বলেছেন, ব্যাংকের টাকা জনগণের টাকা। জনগণের টাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ব্যাংক কাকে দিচ্ছে তা জনগণের জানার অধিকার আছে। তাই প্রত্যেক ঋণ মঞ্জুরের সঙ্গে সঙ্গে মঞ্জুরের অনুমতিপত্র সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করার নির্দেশ প্রদান করেছেন হাইকোর্ট।
এই বিষয়ে নির্দেশনা জারি করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে নির্দেশ। কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান চেক ডিজঅনার মামলা করতে পারবে না-এই সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক বেঞ্চ এই রায় প্রকাশ করেন।
রায়ে বলা হয়, প্রতিটি ঋণের বিপরীতে ইন্সুরেন্স বাধ্যতামূলক করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতি অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা জারী করবে। আর খেলাপী ঋণ আর্থিক প্রতিষ্ঠান কী পদ্ধতিতে আদায় করবে তার বিষয়ে বিস্তারিত অনুমতিপত্রে বর্ণনা দিতে হবে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সকল ঋণ প্রদানে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও আধুনিকীকরণের পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করবে এবং নিয়মিত তা তদারকি করবে।
রায়ে বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণের বিপরীতে জামানত হিসেবে গৃহীত চেক বিনিময়যোগ্য দলিল নয়, তাই এমন চেক প্রত্যাখানের মামলা গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হলো। যদি কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমন চেক প্রত্যাখানের মোকদ্দমা দাখিল করে তবে তা বিচারিক আদালত সরাসরি প্রত্যাখান করবেন।
হাইকোর্ট বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রণীত অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-কে পাশ কাটিয়ে ঋণ গ্রহীতা থেকে তাদের খেয়ালখুশি মত বেআইনীভাবে জামানতস্বরূপ ব্ল্যাংক চেক গ্রহণ করছে। আর তাদের খেয়াল খুশিমত উক্ত ব্ল্যাংক চেকে টাকার অংক বসিয়ে চেক প্রত্যাখান করে ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে চেক প্রত্যাখানের মামলা দায়ের করে সাধারণ জনগনকে বিশেষ করে কৃষক, ক্ষুদ্র এবং ছোট ব্যবসায়ীদের জেলে পাঠাচ্ছে। যেহেতু আর্থিক প্রতিষ্ঠান সমূহ অর্থঋণ আদালতে অনাদায়ী ঋণ আদায়ের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে, তাই ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে চেক প্রত্যাখানের মামলা করার কোন সুযোগ নেই।
জেএন/এমআর