ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের যৌথ বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচদার্য্যের উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘এটাই কি ছাত্রলীগ! কোনো শৃঙ্খলা নেই! পোস্টার নামাতে বলছি, নামায় না, স্লোগান থামায় না! এটা কোন ছাত্রলীগ? এই ছাত্রলীগ আমার চাই না।’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শুক্রবার ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলনে এসব কথা বলেন সেতুমন্ত্রী।
সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, ‘সব নেতা, কর্মী কোথায়! এত নেতা স্টেজে, কর্মী কোথায়? এই ছাত্রলীগ, শেখ হাসিনার ছাত্রলীগ, বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ না। মুজিব কোর্ট পরলেই মুজিব সৈনিক হওয়া যায় না। মুজিব সৈনিক হতে হলে মুজিবের আদর্শের সৈনিক হতে হবে। শেখ হাসিনার খাঁটি কর্মী হতে হবে। খাঁটি কর্মী বিশৃঙ্খলা করে না।’
এ সময় কমিটির সদস্য ছাড়া সবাইকে মঞ্চ ছেড়ে চলে যেতে বলেন কাদের। তখনও কেউ মঞ্চ ছাড়েনি। পরে সাধারণ সম্পাদক লেখক নিজের চেয়ার থেকে কয়েক দফায় মহানগরের নেতাকর্মীদের নামাতে গেলে অনেকেই তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়ান।
এ সময় সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে নানকের মতো, আপনাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান, ছাত্রলীগের প্রাক্তণ সাধারণ সম্পাদক সময়ের অভাবে বক্তৃতা করতে পারেনি। আপনারা (জয়-লেখক) মাইক ধরলে ছাড়েন না।’
কাদের আরও বলেন, ‘এই ছাত্রলীগ আমরা চাই না। সুশৃঙ্খল করুন, সুসংগঠিত করুন। কথা শুনবে না, এই ছাত্রলীগ আমাদের দরকার নেই। অপকর্ম করবে এই ছাত্রলীগ দরকার নেই। দুর্নামের ধারা থেকে ছাত্রলীগকে সুনামের ধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে এটাই আজকের অঙ্গীকার।’
ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বক্তৃতা দিতে পারেননি। আমন্ত্রিত অনেকেই বক্তৃতা দিতে পারেননি। তাহলে দাওয়াত দিলেন কেন? একটু একটু করে বলতে পারল না! আপনারা দুজনে এক ঘণ্টা শেষ করলেন। মনে নেই, আজ শুক্রবার! লেখকের না হয় মনে নেই, জয়ের কি মনে ছিল না! এটা কোন ছাত্রলীগ!’
কর্মীদের স্লোগানে বিরক্ত হয়ে তিনি বলেন, ‘যার নামে স্লোগান হবে তাকে পদ দেওয়া হবে না।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম বাবু।
বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত আছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আবু আহম্মদ মোহাম্মদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। অথচ তারা কেউ বক্তব্য দিতে পারেনি। ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য চলাকালীন সময়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক মঞ্চ ছেড়ে চলে যান।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য্য। সম্মেলন যৌথভাবে সঞ্চালনা করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়, দক্ষিণ শাখার সভাপতি মো. মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো. জুবায়ের আহমেদ।
সকালে সরোজমিনে দেখা যায় সকাল ১০টা সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সমাবেশস্থলে আসেন বেলা ১১টায়। তবে সকাল ১০টায় উপস্থিত ছিলেন বিশেষ অতিথিবৃন্দ।
জেএন/এমআর