আগামী ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছেড়ে বিএনপি কেন নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ করতে চায় তা বোধগম্য নয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের।
তিনি বলেছেন, ‘তাদের (বিএনপি) মহাসমাবেশের জন্য আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রস্তুত রেখেছি। কিন্তু তারা মাঠ ছেড়ে কেন গলির মধ্যে সমাবেশ করবেন সেটা আমরা জানি না।’
৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা দাবিতে বিভাগীয় শহরগুলোতে সমাবেশ করছে বিএনপি। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে যার শেষ হবে।
কিন্তু ঢাকায় সমাবেশের স্থান নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে বলে জানিয়ে এলেও ডিএমপির পক্ষ থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অনুমতি মিলেছে। কিন্তু বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে অনড় অবস্থানে আছে। এমন অবস্থার মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন হুইপ আবু সাঈদ স্বপন।
চট্টগ্রামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জয়পুরহাট-২ আসন থেকে নির্বাচিত এই সংসদ সদস্য বলেন, মহাসমাবেশের জন্য আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রস্তুত রাখলেও তারা মাঠ ছেড়ে কেন গলির মধ্যে সমাবেশ করবেন সেটা আমরা জানি না।
এ সময় বিএনপির সমাবেশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের জনসভার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি। স্বপন বলেন, বিএনপির পলোগ্রাউন্ডের জনসভার সঙ্গে আমাদের জনসভার কোনো সম্পর্ক নেই। পাল্টাপাল্টি করছি না। তাদের সমাবেশে মহাসচিব পর্যায়ের নেতারা ছিল। আমাদের সভানেত্রী আসছেন। আর বিএনপির ঢাকার মহাসমাবেশের (১০ ডিসেম্বর) সঙ্গে আমাদের চট্টগ্রামের জনসভার কোনো সম্পর্ক নেই।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, জনসভার সকল প্রচার প্রচারণা আমরা দলীয়ভাবে করছি। সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা আমরা ব্যবহার করছি না। যেহেতু আমাদের প্রধানমন্ত্রী আসবেন, তাই ওনার নিরাপত্তার জন্য এবং প্রটোকলসহ বিভিন্ন কিছু সরকারিভাবে নিশ্চিত করতে হয়। সেগুলো বাস্তবায়নে প্রশাসন কাজ করছে। তাই সরকারি অনেক নিয়ম কানুন আমাদের মানতে হয়। এতে সহযোগিতা না হয়ে বাধা হয়। যেমন নিরাপত্তার জন্য সিকিউরিটি চেক, বয়ো:বৃদ্ধ অনেকের পক্ষে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে সেটা সম্ভব হয় না। তাই আগ্রহ থাকার পরও তারা জনসভায় যোগ দিতে পারেন না, এতে অনেকে চলে যায়। বরং অসুবিধা হয়।
জনসভায় কেমন জনসমাগম হবে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘হিসাবটা আমরা না বলে আপনারা বের করবেন জনসভা শেষ হলে। এটা কোনো বিভাগীয় সমাবেশ নয়। তিন সাংগঠনিক জেলার জনসভা। বিশ্বাস করি অতীতের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হবে, যা ভবিষতে ভাঙতে কষ্ট হবে।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর পলোগ্রাউন্ডে জনসভা। এটি অনেকদিন পরে হচ্ছে। ২০০৮ সালে নির্বাচনী সভায় আমাদের নেত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজে নেন। আজ যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন তা ওনার অবদান। ওনার প্রতি আমাদের অল্প ঋণ পরিশোধের সুযোগ এসেছে এ জনসভার মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু এই চট্টগ্রামকে ভালোবাসতেন। শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে অনেক ভালোবাসেন। তাই প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের দায়িত্ব নিজে নিয়েছেন।
চট্টগ্রামে এত প্রকল্পের পরও কালুরঘাট সেতু কেন হচ্ছে না প্রশ্ন করা হলে বোয়ালখালীর সাংসদ মোছলেম উদ্দিন বলেন, কালুরঘাটে নতুন সেতু হবে সেটা প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন। জনসভায় উনার বক্তব্যে হয়ত নতুন কিছু পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলার সভাপতি এমএ সালাম, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, নগরের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম এবং উত্তর জেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান।
জেএন/এফও/এমআর