চট্টগ্রামে এ সপ্তাহের বাজারেও তেমন কোন সুখবর নেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে। আগের মতো চড়া দামেই এখনো বিক্রি হচ্ছে চাল, আটা, তেল, চিনি ও ডাল। তবে কিছুটা স্বস্তিতে সবজির বাজার।
আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে চট্টগ্রামের কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারগুলোতে শীতকালীন শাকসবজিতে ভরে গেছে, কমেছে দামও। প্রথম দিকে দাম কিছুটা বেশি হলেও এখন সবজির সরবরাহ বাড়ার সাথে সাথে দামও কমতে শুরু করেছে।
পাইকারি আড়তে বেড়েছে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ শীতকালীন সবজির সরবরাহ। ফলে দামেও ফিরেছে স্বস্তি। প্রকারভেদে প্রতিকেজি সবজিতে কমেছে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, শীত যত বাড়বে সরবরাহও তত বাড়বে আর কমবে দামও।
নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজারে দেখা যায়, প্রথম দিকে ফুলকপি প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে শিমের দাম ছিল ৭০ টাকা কেজি। এখন সেই শিমের কেজি ৫০ টাকায় নেমে এসেছে।
গাজর ছিল ৭০ থেকে ৮০ এখন ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। করলা ছিল ৬০ টাকা, এখন পাওয়া যাচ্ছে ৫০ টাকায়। লাউ প্রতি পিস ছিল ৪০ টাকা, এখন ৩০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
বাঁধাকপি এখন ৩০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। মুলা ছিল ২০ টাকা কেজি, এখন ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পালং শাক ২০ টাকা আঁটিতে বিক্রি হলেও এখন ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা। গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৯০-১১০ টাকা। আর কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি।
চাল কুমড়া প্রতি পিস ৫০-৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। চিচিঙ্গা ৬০, পটল ৫০, ঢেঁড়স ৫০, কচুর লতি ৭০-৮০, পেঁপে ৩০-৪০, বরবটি ৬০-৮০ ও ধুন্দুল ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তাছাড়া বাজারে নতুন আলু ছিল প্রতি কেজি ১১০ টাকা। এখন তা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬০ টাকার ধনেপাতা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে, পাতা পেঁয়াজ ছিল ৩০ টাকা এখন ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখন প্রচুর শীতের সবজি রয়েছে। প্রায় সব ধরনের সবজির সরবরাহ বেশ ভালো। ফলে শীতকালীন সবজির দাম এখন কমতির দিকে।
এ দিকে সপ্তাহ ব্যবধানে মোটা চালের দাম কমেছে কেজিতে ৩ টাকা পর্যন্ত আর স্থিতিশীল রয়েছে সরু চালের সরবরাহ ও দাম। বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল-গুটি-স্বর্ণা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকার কাছাকাছি। আর পাইজাম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৫ টাকায়।
মাঝারি মানের বিআর-২৮ চালের প্রতি কেজি ৫৬-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬৫-৭৫ টাকার মধ্যে। নাজিরশাইল চাল মানভেদে পাওয়া যাচ্ছে প্রতি কেজি ৭৪-৮৫ টাকায়।
বিক্রেতারা জানান, নতুন মৌসুমের চাল বাজারে আসতে থাকায় শীঘ্রই বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দাম কমবে।
চিনির বাজারে অস্থিরতা এখনো কাটেনি। বেশিরভাগ দোকানে প্যাকেটজাত চিনি মিলছে না। কিছু দোকানে খোলা চিনি পাওয়া গেলেও বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা কেজি দরে।
বেড়েছে আটার দাম। খোলা আটা কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা এবং প্যাকেটজাত আটা ৭০-৭৫ টাকা। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা লিটার। দেশি মসুরের ডালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা। ইন্ডিয়ান মসুরের ডালের কেজি ১২০-১২৫ টাকা।
মাছ-মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্রয়লার ও সোনালী মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা দরে। সোনালী মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকায়।
তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। বাজারভেদে ৭০০-৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব ধরনের মাছের দামও অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে।
জেএন/পিআর