চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভা এলাকার আলীপুর গ্রামের ৪নং ওয়ার্ড মদিনা আবাসিকের সামনে একটি কলোনীতে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতো ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী মো. হুমায়ুন।
তার দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে রয়েছে দেড় মাস বয়সী একটি পুত্র সন্তান। তার নাম রাখা হয় মো. মাসুম। হুমায়নের একটি ঘটনায় সম্প্রতি পুরো এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
মাত্র এক লক্ষ ১০ হাজার টাকায় সে নিজের পুত্র সন্তান মাসুমকে অন্যজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। কেউ বলছে জুয়ার টাকার জন্য, আবার কেউ বলছে অভাবের তাড়নায় এ ঘৃণ্য কাজটি করেছেন জন্মদাতা পাষণ্ড পিতা।
স্থানীয়রা জানান, লক্ষ টাকার লোভ যে সামলাতে পারে না। বাবা হয়ে নিজের সন্তানকে যে বিক্রি করে দেয়, সে অন্যের বাচ্চাকেও বিক্রি করতে দ্বিধাবোধ করবেনা। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আশে পাশের স্থানীয় জনগণ।
এদিকে বুকের ধনকে ফিরে পেতে হতভাগা ছেলের মা মর্জিনা বেগম (৩২) বুকফাটা আর্তনাদে ফেটে পড়েন। তার আহাজারিতে আকাশবিদীর্ণ আওয়াজ কোনোভাবেই যেন বন্ধ হচ্ছে না।
আর এ খবরটি এক কান দুকান করতে করতে পৌছে যায় প্রশাসনের কানে। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিশুটি উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে পাষণ্ড পিতা এখনো পলাতক রয়েছে। তার খোঁজ পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, পাষণ্ড পিতা হুমায়ুনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। পিতা মৃত নাম করম আলী। হুমায়ুন গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে দেড় মাস বয়সী সন্তান মাসুমকে মাত্র এক লক্ষ ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে এক মহিলার কাছে বিক্রি করে দিয়েছিল।
তবে স্থানীয়দের সহযোগীতা নিয়ে প্রশাসন মাত্র ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বিক্রিত সন্তানটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
এ বিষয়ে গর্ভধারিণী মা মর্জিনা বেগম গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, আমাকে কিছু না জানিয়ে নিজেদের সন্তানকে মাত্র ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে আমার স্বামী হুমায়ুন।
সে অভিযোগ করে বলেন, একই ঘটনা সে তার প্রথম স্ত্রীর সাথেও করেছে। ওই ঘরের শিশু সন্তানকেও সে ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলো। তবে স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বৃহস্পতিবার সকালে আমার কলিজার ধনকে ফিরে পেয়েছি।
ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক জানিয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহিদুল আলম বলেন, আপন জন্মদাতা পিতা তার সন্তানকে টাকার জন্য বিক্রি করে দিযেছে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে আমরা বিষয়টি জানতে পেরে তথ্য প্রযুক্তি ও বিভিন্ন জনের সহযোগীতা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করি। অবশেষে শিশুটিকে তার মায়ের কোল ফিরিয়ে দিতে পেরে খুব ভাল লাগছে।
জেএন/পিআর