রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হয়েছে। বিরতিহীনভাবে ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
শীত উপেক্ষা করে এরই মধ্যে ভোট কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছেন ভোটারা। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের লম্বা লাইন লক্ষ করা গেছে। এরই মধ্যে নির্বাচনের ভোটগ্রহণে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনের আগের দিন সোমবার রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ২২৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮৬টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর গোটা নির্বাচনজুড়ে ছয় স্তরের নিরাপত্তার পরিকল্পনা নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণে বসানো হয়েছে এক হাজার ৮০৭ সিসিটিভি ক্যামেরা। কার্যালয় থেকে এসব ক্যামেরা মনিটরিং করছেন নির্বাচন কমিশনসহ রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন জানিয়েছেন, নির্বাচনে বিশৃঙ্খলা রোধে রবিবার মধ্যরাত থেকে রংপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় সব মোটর সাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
সোমবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনের দিন সব ধরনের যানবাহন এবং ইজিবাইক চলাচল বন্ধ রাখা হয়। নির্বাচনে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। র্যাব, বিজিবি পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পুরো নির্বাচনি এলাকা নিরাপত্তা বেষ্টনিতে রাখবে।
এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার সকাল থেকে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ছয় স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের পাশাপাশি স্পেশাল রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স রয়েছে।
সেগুলো রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ফোর্স নিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন। এর বাইরে ১১টি বিজিবির টিম কাজ করছে। ১৬/১৭টি র্যাবের টিম রয়েছে।
ব্যাটালিয়ন আনসার ছাড়াও সাদা পোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা টিম ও অন্যান্য গোয়েন্দারা কাজ করছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে পারেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সে ব্যবস্থা করছে।
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরসহ মোট প্রার্থী ২৫১ জন। এদের মধ্যে ৯ জন মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া ১১টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১৮৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা (বর্তমান মেয়র), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী লতিফুর রহমান মিলন (দল থেকে বহিষ্কৃত), ইসলামী আন্দোলনের আমিরুজ্জামান পিয়াল, জাসদের শফিউর রহমান, জাকের পার্টির আশরাফুল ইসলাম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেস পার্টির আবু রায়হান, খেলাফতে মজলিসের তৌহিদুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি।
এই নির্বাচনে মোট ভোটার চার লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ বাকি দুই লাখ ১৪ হাজার ৪৬৯ জন নারী ভোটার। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ২২৯টি। মোট ওয়ার্ড ৩৩টি।
রংপুর সিটি করপোরেশন গঠনের পর ২০১২ সালে প্রথম নির্বাচন হয়। এই সিটির প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় নির্বাচনে মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা দ্বিতীয় মেয়র নির্বাচিত হন। এবার এই সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচন হবে।
জেএন/পিআর