পটিয়ায় দুই ডেভলাপারের দ্বন্ধে বাণিজ্যিক ভবনে দুইদিন ধরে তালা

চট্টগ্রামের পটিয়ার থানার ১০০ গজের মধ্যে দুই আবাসন ব্যবসায়ীর দ্বন্ধে কব্জির জোর দেখাল হাবিবুল হক চৌধুরী নামের প্রভাবশালী। গত ২৫ ও ২৬ ডিসেম্বর অর্ধ শতাধিক সন্ত্রাসী দুই দফা হামলা চালিয়ে কেপিডিএল মার্কেটে ব্যাপক ভাংচুর, লুটপাট এবং বেশ কয়েকজনকে মারধর করে। মার্কেটের গেইটে তালা লাগিয়ে দেয়। পুলিশের সামনে এমন ঘটনা ঘটলেও তারা ছিল নির্বিকার।

- Advertisement -

কেপিডিএল কর্মকর্তাদের অভিযোগ, হামলাকারীরা ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। তা না দেওয়া এ হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি।

- Advertisement -google news follower

জানা যায়, গত ২০১২ সালে পটিয়া পৌর সদরের থানার মোড় এলাকায় ভূমি মালিক আবুল কাশেমের ২৬ শতক ভূমির উপর ডিউ নামের একটি ডেপেলার কোম্পানির সাথে বহুতল ভবন নির্মানের চুক্তি হয়। একই বছরে ওই স্থানে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হয়।  পরে ওই ডিউ ক্রাউন সেন্টার নামের একটি দ্বিতল ভবন নির্মিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী ওই স্থানে দশতলা ভবন নির্মান হওয়ার কথা থাকলেও গত
২০১৭ সালে চুক্তি শেষ হয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের জানুয়ারীতে কেপিডিএল বির্ল্ডাস নামের অপর আরেকটি ডেভলাপার কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হন ভূমি মালিক আবুল কাশেম। এরপর থেকে ওই ভবনে ৭তলা ভবন দৃশ্যমান হয়। এরমধ্যে কেপিডিএলের সাথে ডিউ ডেপলাপারের মধ্যে লেনদেন নিয়ে বিরোধ সৃষ্ঠি হয়।

এরইনধারাবাহিকতায় গত ২৫ ডিসেম্বর (রবিবার) সকাল ১১ টায় হাবিবের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক সন্ত্রাসী মার্কেটে হামলা চালায়। পরে ২৬ ডিসেম্বর  (সোমবার) সন্ধ্যায় মার্কেটির  মূল ফটকের শার্টার টাঙ্গিয়ে তালা লাগিয়ে দেয়। এ খবর পেয়ে পটিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

- Advertisement -islamibank

কেপিডিএল বিল্ডার্সের হেড অব মার্কেটিং মাহামুদুল হাসান বলেন, আমরা পটিয়াথানার মোড়ে একটি বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করছি। ১০ তলা ভবনের সাত তলার কাছ চলছে। নিচের একতলায় ব্যাংক, বেশ কয়েকটি বীমা ও অন্তত ৫০টি চালু অবস্থায় দোকান রয়েছে। ডিউ ডেপলাপার কোম্পানি নামে একটি ডেভলাপার কোম্পানি প্রথমে ল্যান্ড ওর্নারের সঙ্গে চুক্তি ভঙ্গ করায় আমাদের কেপিডিএল বিল্ডার্সের সাথে তাঁরা চুক্তি বদ্ধ হয়। এরপর থেকেই  ডিউ ডেপলাপার কোম্পানির চেয়ারম্যান দিদারুল হক চৌধুরীর ভাই হাবিবুল হক চৌধুরী আমাদের কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল।

মাহামুদুল হাসানের অভিযোগ, আমরা তাদের অন্যায় আবদার না মেটানোর কারণে বাণিজ্যিক ভবনটিতে হাবিবুল হকের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ব্যাপক ভাংচুর চালায়।

কেপিডিএল বিল্ডার্সের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আহমদ কবির বলেন, সন্ত্রাসীরা প্রায় ২২ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। ভবনের জানালা, কাচ, আসবাপত্র ভাংচুর করে। এতে অন্তত ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

তিনি জানান, এ বিষয়ে পটিয়া থানায় আমার স্টাফ লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশের সামনে তাঁকে পিটানো হয়। তিনি বলেন, আদালতে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও কেপিডিএল মার্কেটের ভূমির মালিক আবুল কাশেম বলেন, ডিউ ডেপলাপার কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়েছে। তাদের সাথে আমাদেরন কোন লেনদেন নেই। তারপরও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নানা সুবিধা আদায়ের চেষ্ঠা করে না পেয়ে তান্ডব চালায়। তারা চুক্তি অনুযায়ী দশতলা ভবনের কাজ শেষ না করায় অন্য কোম্পানির সাথে চুক্তি করা হয়। ডিউ ডেবেলাপারের কারনেনআমরা দশ বছর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

প্রকল্পের প্রকৌশলী মুহাম্মদ মহসিন বলেন, গত রবিবার এক প্রভাবশালীর নেতৃত্বে ২০-২৫ জন যুবক অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাংচুর চালায়। এসময় তাদেরন হামলার শিকার হয়েছি। তারা মার্কেটের সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ, ক্যামেরা নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে ডিউ ডেপলাপার কোম্পানির চেয়ারম্যান দিদারুল হক চৌধুরী বলেন, কেপিডিএল বিল্ডার্সের কাছে অনেক টাকা আছে। তাদের ৯টি চেক রয়েছে। যা নগদায়ন করা যাচ্ছে না। আমাদের টাকাগুলো না দেওয়ার জন্য কেপিডিএল কর্তৃপক্ষ ভাংচুর নাটক সাজিয়েছে।

এ ব্যাপারে পটিয়া থানার ওসি (তদন্ত) রাশেদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে কেপিডিএল বিল্ডার্সের ওই বিল্ডিংয়ের গেইটে তালা লাগানোর কারণে ব্যবসায়ীরা ভেতরে ঢুকতে পারছেনা। ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে।

জেএন/এফও/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM