আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৯ সালের এদিনে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।
মৃত্যুর সময় সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সরকারের জনপ্রশাসনমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় তিনি সদ্য অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
দলের পক্ষ থেকে কোনো কর্মসূচি না থাকলেও পারিবারিকভাবে প্রয়াত এ নেতার মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে।
মঙ্গলবার সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে বনানী কবরস্থানে তার কবরে শ্রদ্ধা জানানো হবে। সৈয়দ আশরাফের বোন ও কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি বনানী কবরস্থানে সকালে শ্রদ্ধা জানাবেন। এ ছাড়াও সৈয়দ আশরাফের বাড়ি কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
জাকিয়া নূর লিপি বলেন, “আশরাফ ভাই আড়ম্বর পছন্দ করতেন না, তাই তার মৃত্যুবার্ষিকী যতটা সম্ভব অনাড়ম্বরভাবে পালন করা হবে।
ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সৈয়দ আশরাফ ব্যাংককের একটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসা নেন। চিকিৎসার জন্য দেশে অবস্থান করতে না পারলেও সৈয়দ আশরাফ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ সদর ও হোসেনপুর উপজেলা) আসন থেকে পুনর্নির্বাচিত হন।
সৈয়দ আশরাফ ১৯৫২ সালের ১ জানুয়ারি ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা সৈয়দ নজরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।
রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য আশরাফুল ইসলাম ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি মুক্তি বাহিনীর একজন সদস্য হিসেবে ভারতের দেরাদুনে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
পারিবারিক ঐতিহ্যের সূত্র ধরে তিনি ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭০ বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সৈয়দ আশরাফ। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার বাবাসহ জাতীয় চার নেতা হত্যার পর তিনি লন্ডন চলে যান।
আশরাফুল ইসলাম ১৯৯৬ সালে দেশে ফিরে আসেন এবং কিশোরগঞ্জ সদর আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০১ সালের ১ অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় তিনি নির্বাচিত হন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৮ সালের নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং আওয়ামী লীগের মহাজোট সরকারের তিনি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় মেয়াদেও তিনি এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।
২০১৫ সালের ১৬ জুলাই শেখ হাসিনা সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
জেএন/পিআর