নগরের এনায়েত বাজার এলাকার বৃদ্ধ মা-বাবা তাদের সন্তান মুনতাসির আল মামুনের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে তার বিরুদ্ধে আদালতে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। গত ২৯ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ অভিযোগ করেন। অভিযোগে তাঁরা উল্লেখ করেছেন, ছেলে একাধিক বিয়ে করে পরে তাদের নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেয়। একে একে তিনটি বিয়ে করে এমন অত্যাচর চালায়। মা বাবা প্রতিবাদ করলে তাঁদেরও মারধর করেন।
অভিযুক্ত মুনতাসির আল মামুন কোতোয়ালি থানার এনায়েত বাজার গোয়াল পাড়ার আনছারী বিল্ডিংয়ের মুজিবুর রহমান ও সারা বেগমের পুত্র।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মুনতাসির আল মামুন ২০১০ সাল থেকে বেকারত্ব জীবন যাপন করছে। তার বেকারত্ব জীবন ও অসৌজন্যমূলক আচরণের জন্য ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তার প্রথম স্ত্রী তাকে তালাক দেয়। একই বছর বান্দরবানের আবু সুফিয়ানের মেয়ে রাজিয়া সুলতানার সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের এক মাস পর ওই স্ত্রীর উপর নির্মম নির্যাতন চালায় মুনতাসির। অত্যাচারে অতিষ্ট স্ত্রী বান্দরবনে বাবার বাড়িতে চলে যায়। ২০১৬ সালে তাঁর একটি মেয়ে জন্মগ্রহণ করেন। পরে মুসলিম
পারিবারিক আইন ৭(৩) ধারা মোতাবেক নোটিশ করলে সমঝোতার মাধ্যমে মুনতাসির তার স্ত্রী রাজিয়াকে পুনরায় ঘরে তুলে আনেন। এরই মধ্যে মুনতাসির তার বাবাকে হত্যার চেস্টা চালায়। তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা ও মা সায়েরা বেগম নিবৃত করতে চাইলে তাদের উপর হামলা করে এবং রাজিয়াকে বেধরক মারধর করে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, রাজিয়া সুলতানা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগায় ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সে তাঁর বাবার বাড়ি বান্দরবান চলে যায়।
মুনতাসিরের বাবা মুজিবুর রহমানের অভিযোগ, স্ত্রী চলে যাওয়ার পর মুনতাসির আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। পরিবারের জিনিসপত্র লুটপাটের পাশাপাশি বাবা- মা’কে নতুন আরেকটি বিয়ের জন্য অত্যাচার করতে থাকে। তিনি জানান, এলাকার সমাজসেবী ও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা আকতার চৌধুরী দাযিত্ব নিয়ে তাঁর প্রতিবেশি ভাইয়ের মেয়ে শাকিলা আকতারকে মুনতাসিরের সাথে বিয়ে দেন। ২০২০ সালে তাদের একটি ছেলে সন্তান হয়।
শাকিলা আকতারের অভিযোগ, বিয়ের ৬ মাস না যেতেই তাঁর উপর শারীরিক নির্যাতন করে প্রায় সময় বাসা থেকে বের করে দেন মুনতাসির। এরমধ্যে ২০২২ সালের ১০ নভেম্বর আমাকে ব্যাপক মারধর করেন। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে যায়। পরে ৯৯৯ এ পুলিশকে অভিযোগ দিলে আমাকে উদ্ধার করে মুনতাসিরকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যায়।
শাকিলা আকতার বলেন, থানায় মুনতাসির অনুতপ্ত ও দোষ স্বীকার করলে তার পিতার জিম্মায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। একই বছর ১৫ নভেম্বর সে টাকা এবং জায়গা জমিন তার নামে লিখে দিতে তার মা বাবাকে মারধর করেন। সে সময় জান্নাতুল ফেরদৌস নামে এক গার্মেন্টস শ্রমিকের সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে বিয়ের চেস্টা চালায়।
কোর্ট জিডিতে মুনতাসিরের বাবা মা এর অভিযোগ, ছেলের সাথে একাধিক নারীর পরকীয়া রয়েছে। গত ২৭ নভেম্বর ঘরের কাউকে না জানিয়ে সে দলিলপত্র ও বাসার টাকা চুরি করে আত্মগোপনে যায়। তাদের অভিযোগ, মুনতাসির একজন প্রতারক। বিভিন্ন সময় লোকজনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে লোকজনকে স্বর্বশান্ত করে।
এ ব্যাপারে মুনতাসিরের ব্যবহ্নত ফোনে একাধিক বার কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
জেএন/এফও/এমআর