দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক সংখ্যা এবং দূরত্ব বিবেচনায় ডাবল শিফটের পরিবর্তে এক শিফট চালুর নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কাছাকাছি থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো একীভূত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কাছাকাছি থাকা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো একীভূত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে এ নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু যেসব স্কুল এক কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে সেসব স্কুল সম্পর্কে এখনও কোন নির্দেশনা না দেওয়ায় বিপাকে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে এ উদ্যোগ নিয়ে চট্টগ্রামে শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
এ বিষয়ে কথা হয় সিএণ্ডবি স্কুলের অভিভাবক এনি কর্মকারের সাথে। তিনি বলেন, সন্তানকে পছন্দের বিদ্যালয়ে ভর্তি করার পর শ্রেণি সংকট কিংবা শিক্ষক সংকটের কারণে কেন এক কিলোমিটার দূরত্বে অন্য বিদ্যালয়ে পাঠাতে হবে। পাশাপাশি নতুন বিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষকদের সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পর্ক গড়তেই তো বছর পার হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে নগরের চন্দনপুরা এমদাদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিদ্দিক আহমেদ বলেন, এক শিফটে একটি বিদ্যালয় পরিচালনা করতে গেলে কমপক্ষে ৮ জন শিক্ষকের প্রয়োজন। এক শিফট চালুর জন্য আমাদের আশপাশে এমন স্কুল নেই।
তিনি আরও বলেন, আমার পাশে কুসুমকুমারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে কিন্তু তারা মর্নিং শিফটে পাঠদান করে। তাদের সঙ্গে আমরা এক শিফটে যেতে চাইলে আমাদেরও মর্নিং শিফটে চলে যেতে হবে। এছাড়া গুলজার বেগম স্কুল ও কাতালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং শ্রেণিকক্ষ উভয়ই পর্যাপ্ত থাকার কারণে তারা নিজেরাই এক শিফট চালু করে নিয়েছে। আমাদের শিক্ষক স্বল্পতার কারণে আমরা কারও সঙ্গে এক শিফট করতে পারছি না।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, যেখানে এক শিফট চালু করা যাবে সেখানেই এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হবে। আর যেখানে শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকট কিংবা এক কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব রয়েছে, সেসব বিদ্যালয়ের বিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে আমরা সেসব স্কুলের তালিকা চেয়ে চিঠি দিয়েছি।
জানা গেছে, ছাত্র ও শিক্ষক সংখ্যায় ভারসাম্যহীনতা, দূরত্ব, শিফট ইত্যাদি বিবেচনায় কিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একীভূত করার জন্য সম্প্রতি সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটি করার জন্য মন্ত্রণালয়ের যুক্তি ছিল, ছাত্র কম-শিক্ষক বেশি, শিক্ষক কম ও ছাত্র বেশি- এমন ভারসাম্যহীনতা কোথাও কোথাও আছে। কাছাকাছি থাকা স্কুলগুলো যদি একীভূত করা যায়, তাহলে ছাত্রদের শিখন ঘণ্টাও বেশি হবে।
জেএন/হিমেল/এমআর