দীর্ঘ দিন পর আজ শুক্রবার থেকে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন নৌপথে ফের পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের শহীদ এটিএম জাফর আলম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক মোহম্মদ শাহীন ইমরান।
জেলা প্রশাসক জানান, বুধবার নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর, দফতরের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হয়, তারই আলোকে শুক্রবার সকাল থেকে দুটি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয় এবং শনিবার থেকে লাইসেন্স ও ফিটনেস আছে এমন সকল জাহাজ চলবে বলে জানান।
জেলা প্রশাসক মোহম্মদ শাহীন ইমরান আরো জানান, এ ক্ষেত্রে জাহাজ কর্তৃপক্ষকে কিছু শর্ত দেয়া হয়েছে তা না মানলে জাহাজ চলাচলের অনুমতি বাতিল করা হবে।
শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না। জাহাজে পর্যাপ্ত ঝুড়ি রাখত হবে যাতে চিপস বা কোনো পলিথিন ও প্লাস্টিক সাগরে না ফেলে এবং প্রতিটি জাহাজে এ বিষয়ে সতর্কতামূলক প্লেকার্ড দিতে হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্লাস্টিক বর্জ্য জাহাজে করে এপারে নিয়ে আসতে সাহায্য করতে হবে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য যাতে ধ্বংস না এ বিষয়ে সচেতন করতে জাহাজে প্রচারণা চালাতে হবে। এরকম আরো কয়েকটি অবশ্যই পালনীয় শর্ত সাপেক্ষে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছে, যার ব্যত্যয় ঘটলে অনুমতি বাতিল করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
এদিকে খবর নিয়ে জানা গেছে শুক্রবার সকালে এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস নামের দুটো জাহাজ চলাচল করবে। শনিবার থেকে বাকি জাহাজগুলো চলাচল শুরু করবে।
টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে চলাচলকারী জাহাজমালিকদের সংগঠন সি-ক্রুজ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সভাপতি তোফায়েল আহমদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের ছাড়পত্র পেয়েছি, শুক্রবার থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে আমাদের দুটি জাহাজ চলাচল শুরু করবে। শনিবার থেকে সাতটি জাহাজ চলবে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দ্বীপের পর্যটক ব্যবসায়ীরা পর্যটক না আসাতে এমনিতে লোকসানে রয়েছেন। পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরুর খবরে দ্বীপের সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা খুশি। আমরাও পর্যটকদের প্রবাল দ্বীপে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রয়েছি।
এদিকে এই নৌপথে ১৬ বছর ধরে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নাফ নদীর বিভিন্ন জায়গায় বালুচর জেগে ওঠাসহ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের কারণে ১ নভেম্বর থেকে পর্যটক মৌসুমও টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
২০২২ সালের ৩০ মার্চ থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাক চলাচল বন্ধ ছিলো। ৯ মাস পর খুললো এই নৌরুট।
জেএন/এফও/এমআর