চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে ভাইয়ের হত্যা মামলাকে পুঁজি করে নিরীহ লোকজনকে ফাঁসানো অভিযোগ উঠেছে জামায়াত ক্যাডার মো. মোহছেনের বিরুদ্ধে। তার ভাই হত্যার এ ঘটনাকে পুঁজি করে এলাকার নিরীহ লোকজনকে মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করে হয়রানী করছে।
আজ শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের একটি রেস্টুরেন্টে এলাকাবাসীর পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন অভিযোগ করেন ফজলুল করিম। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মির্জাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এসএম হাসেম, আমিজরুজ্জামান, সাবেক ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম ও রফিকুল আলম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মোহাম্মদ মোহছেন একজন সন্ত্রাসী ও সাবেক শিবির ক্যাডার। সে ১৯৯৯ সালে মির্জাপুরে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের কর্মীদের ওপর ব্রাশ ফায়ার করেন। পরে কৌশলে দেশের বাইরে পালিয়ে যায়। ২১ বছর পর দেশে ফিরে এলাকায় নানা সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। তার অত্যাচারে এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ। তার সাথে বনিবনা না হলে হাতুড়ি পিটিয়ে লোকজনকে রক্তাক্ত করে লোকজনকে। সম্প্রতি তার হামলার শিকার হয়েছেন বয়োবৃদ্ধ থেকে শুরু করে স্কুল পড়ুয়া ছাত্ররাও।
সংবাদ সম্মেলনে ফজলুল করিম বলেন, মোহছেনের ভাই মোমেন এলাহী কালুর স্ত্রীর সঙ্গে এনায়েতুল গনি সুমনের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। কালুর স্ত্রীর পাশাপাশি সুমনের সঙ্গে তাদের সৎবোন আছমার সঙ্গে চলে প্রেমের সম্পর্ক। পরে আছমাকে সুমন বিয়ে করে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে মোহছেন ও তাদের ভাইয়েরা ক্ষিপ্ত হন। সুমন ও তার পরিবারের ওপর নির্যাতন শুরু করে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০২১ সালের ১৮ ডিসেম্বর হোছেন এলাহী খুন হন। এ ঘটনায় এনায়েতুল গনি সুমন গ্রেফতারের পর আদালতে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দেয়। এতে দুই পরিবারের দ্বন্দ্বে খুনের ঘটনা উঠে আসে।
ফজলুল করিমের অভিযোগ, হোছেন এলাহী খুনের ঘটনায় হাটহাজারী থানায় একটি মামলায় ১২ জনকে আসামি করে একটি মামলা করে। ওই মামলায় হত্যায় জড়িত আসামিদের সাথে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এলাকার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বেশ কয়েকজনকে আসামি করা হয়। অপরদিকে মূল আসামি ঘটনার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার পর এলাকার ৩২ জনকে আসামি করে আরও একটি সিআর মামলা দায়ের করেন মোহছেন। পরিবারের নারীদের প্রেম ও পরকীয়ার ঘটনাকে আড়াল করার জন্য এলাকার মসজিদ ও মাদরাসা লেনদেনকে কেন্দ্র করে হত্যাকান্ড বলে প্রচার করে তিনি জামায়াতের রাজনৈতি উদ্দেশ্য হাসিলের চেস্টা করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতা ও ব্যবসায়ী মো. রাশেদ বলেন, ঘটনার দিন ও সময়ে আমি চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার অফিসে ও কাতালগঞ্জের বাসায় ছিলাম। ঘটনার আগেও কোন দিন হাটহাজারী বা এলাকায় যায়নি। তার স্বপক্ষে প্রমাণস্বরপ বাসায় ও অফিসে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। এছাড়া ঐ দিনের আমার অবস্থান ট্যাকিং বা গত বছরের ৪ আগাস্ট জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে আবেদন করেছি। হাটহাজারীর চারিয়া এলাকার রাশেদ নামে আরও একজনকে আসামী করা হয়েছে। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে উল্লেখিত রাশেদ ওই ব্যক্তি হতে পারে বলে আমার ধারণা।
স্থানীয় যুবলীগ নেতা এম এস হাশেম বলেন, ঘটনার দিন আমি চট্টগ্রাম নগরে দলীয় প্রোগ্রামে ছিলাম। সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মোহছেন আমাকে মামলায় আসামি করেন। পুলিশ দিয়ে নির্যাতন চালায়। অথচ জামায়াত ক্যাডার মোহছেনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও বীরদর্পে সে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে।
জেএন/এফও/এমআর