বিপুল পরিমাণ অর্থবিত্তের মালিক। ব্যবহার করেন হাল ফ্যাশনের দামি গাড়ি। পেশা তার ভিক্ষাবৃত্তি। মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবির বিভিন্ন মসজিদের ফটকের কাছে বসে ভিক্ষা করতেন তিনি।
ওই ভিক্ষুক নারী পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর এমন খবর প্রকাশ পায়। আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবি থেকে ওই নারী ভিক্ষুককে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। খালিজ টাইমস।
আবুধাবির পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদের ফটকের কাছে বসে ভিক্ষা করতেন সেই নারী; প্রতিদিন নিজের দামি গাড়িতে করে বাইরে বের হতেন, তারপর শহরের কোনো মসজিদের ফটকের কাছে পছন্দমতো একটি জায়গা বেছে নিয়ে বসে পড়তেন ভিক্ষার জন্য।
মানুষের সন্দেহ এড়ানোর জন্য অবশ্য গাড়িটি ভিক্ষার স্থান থেকে বেশ দূরেই রাখতেন তিনি। তার গাড়ি ও বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ জব্দ করা হয়েছে, সবই ভিক্ষা করে উপার্জন করা। তবে কী পরিমাণ অর্থ পাওয়া গেছে— তা জানায়নি পুলিশ।
গত বছরের ৬ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১৫৯ জন ভিক্ষুককে গ্রেপ্তার করা হয়। এই ভিক্ষুকদের মধ্য ওই নারীও ছিলেন।
পুলিশের এক কর্মকর্তা খালিজ টাইমসকে জানান, ওই নারীর ভিক্ষা করা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকেই। তারাই পুলিশকে ওই নারীর ব্যাপারে জানান। পরে তাঁকে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় তিনি বিভিন্ন মসজিদের সামনে ভিক্ষা করেন।
আমিরাতে সামাজিক ও আইনগত— উভয় দিক থেকেই ভিক্ষাবৃত্তিকে খুব নেতিবাচক হিসেবে দেখা হয়। ‘ভিক্ষা করা একটি সামাজিক অভিশাপ এবং এটি যে কোনো সভ্য সমাজের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করে’— এমন ধারণা সাধারণভাবে প্রচলিত দেশটিতে।
আইনগতভাবে দেশটিতে আমিরাতে ভিক্ষার শাস্তি তিন মাসের কারাদণ্ড ও ৫ হাজার দিরহাম জরিমানার আইন আছে। দুটি দণ্ডের মধ্যে যেকোনো একটি প্রয়োগ করা হয়; সংগঠিত ভিক্ষাবৃত্তির শাস্তি হলো ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং এক লাখ দিরহাম পর্যন্ত জরিমানা।
পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লোকজনকে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে দূরে রাখতে আমিরাতের দরিদ্র-অসহায়-কর্মহীনদের জন্য একটি সরকার একটি দাতব্য প্রকল্প চালু করেছে। কেউ যদি আর্থিক সংকটে থাকেন, সেক্ষেত্রে সেই প্রকল্পে নিজের নাম নিবন্ধন করলেই তিনি সরকারি সহায়তা পাবেন।
জেএন/পিআর