সীতাকুণ্ডে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর দুই কিশোরী হত্যার রায় ঘোষণা হয়েছে আজ বুধবার। চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলীম উল্লাহ এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপরজনকে খালাস দিয়েছেন। রায়ে বিচারক উল্লেখ করেছেন, মামলার তদন্তে অবহেলা ও গাফিলতি হয়েছে বলে মনে করেন আদালত। এ জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দণ্ডিত আসামির নাম আবুল হোসেন (৩১)। তিনি জেলে আটক রয়েছেন। তিনি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়ার মো. ইসমাইলের ছেলে। অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় ওমর হায়াত ওরফে মানিককে খালাস দেওয়া হয়েছে।
তিনি রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ মে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল মহাদেবপুর ত্রিপুরা পল্লীতে সবিরাণী ত্রিপুরা (১৬) এবং সকলতি ত্রিপুরাকে (১৭) হত্যা করা হয়। পরে তাদের মরদেহ রশি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আবুল হোসেনসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেন নিহত সবিরাণীর বাবা সুমন ত্রিপুরা। পরে ওই মামলায় আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। আবুল হোসেন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, সে সকলতি ত্রিপুরার গলায় রশি বেঁধে ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। আর অন্য আসামি ওমর হায়াত মানিক এবং রাজিব হত্যা করেন সবিরাণী ত্রিপুরাকে। এদিকে এ মামলার তদন্তের সময় রাজিব দুর্বৃত্তদের গুলিতে মারা যান। ফলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে অন্য দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যায়। বিচারচলাকালে আদালত ১৯ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।
চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী এই হত্যা মামলায় দুজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পরবর্তীতে আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কিন্তু ওমর হায়াত ওরফে মানিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এতে করে আদালত মনে করেছেন, তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতি ছিল। যে কারণে আদালত তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
জেএন/এফও/এমআর