ঘরের মাঠে নগরপ্রতিদ্বন্দ্বি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে প্রথমার্ধজুড়ে অপরিকল্পিত খেলতে থাকা রিয়াল মাদ্রিদ ঘুরে দাঁড়ালো বিরতির পর। দ্বিতীয়ার্ধের প্রায় শেষদিকে এসে সমতায় ফেরে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। এরপর অতিরিক্ত সময়ে ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া অ্যাটলেটিকোর জালে আরও দু’বার বল জড়ান করিম বেনজেমা-ভিনিসিয়াস জুনিয়ররা। শেষ পর্যন্ত ৩-১ গোলের জয় নিয়ে কোপা দেল রে’র সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে লস ব্লাঙ্কোসরা।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টায় সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে কোপা দেল রে’র কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হয় রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে অ্যাটলেটিকো। ম্যাচের ১৯তম মিনিটে গোল করে অ্যাটলেটিকোকে লিড এনে দেন আলভারো মোরাতা। এরপরই যেন রিয়ালের টনক নড়ে। ১-০ গোলে পিছিয়ে যাওয়া রিয়াল মাদ্রিদ গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে। কিন্তু প্রথমার্ধের লড়াইয়ে অ্যাটলেটিকোর সঙ্গে যেন কোনোভাবেই পেরে উঠছিল না তারা।
এদিকে ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে চোটে পড়েন লেফট ব্যাক ফারল্যান্ড মেন্ডি। তার বদলি হিসেবে মাঠে নামেন মিডফিল্ডার দানি সেবায়োস। অন্যদিকে লেফট ব্যাক পজিশনে খেলেন আরেক মিডফিল্ডার এডুয়ার্ড কামাভিঙ্গা। শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলে পিছিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
দ্বিতীয়ার্ধের দারুণ কিছু আক্রমণ সাজায় রিয়াল মাদ্রিদ। তবে সমতায় ফেরার জন্য তাদের ৭৯ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ৫৮তম মিনিটে ডি বক্সের ঠিক সামনে থেকে দারুণ এক শট নেন করিম বেনজেমা। তবে ঝাঁপিয়ে পড়ে বেনজেমার শটটি রুখে দেন জান অবলাক। এরপর দুই পক্ষই বেশ কিছু আক্রমণ করে। কিন্তু কোনো পক্ষই গোলের দেখা পায়নি। ৭৩তম মিনিটে ডি বক্সের সামনে ফ্রি-কিক পায় অ্যাটলেটিকো। তবে গ্রিজম্যানের নেওয়া দারুণ ফ্রি-কিকটি রুখে দেন থিবো কর্তোয়া।
ম্যাচের ৬৯ মিনিটে ভালভার্দের বদলি হিসেবে রদ্রিগোকে মাঠে নামানো হয়। মাঠে নামার ১০ মিনিটের মাথায় গোল করে দলকে সমতায় ফেরান রিয়ালের এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। নির্ধারিত সময়ের মাত্র ১১ মিনিট বাকি থাকতে লুকা মদ্রিচের বাড়ানো বলটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে অ্যাটলেটিকোর ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে ডান পায়ের শটে গোলরক্ষক জান অবলাককে পরাস্ত করেন তিনি।
ম্যাচের বাকি সময়ে বেনজেমা ও ভিনিসিয়াস জুনিয়র গোল করার বেশ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করেন। তবে সবচেয়ে বড় সুযোগ হাতছাড়া করেন অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান। ৮৫তম মিনিটে ডান দিক থেকে ভেসে আসা বলে ডি বক্সের ভেতর থেকে শট নিয়েও জালে জড়াতে পারেননি এই ফরাসি তারকা। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ হয় ১-১ গোলের সমতায়।
অতিরিক্ত সময়ের ৯৯তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন অ্যাটলেটিকোর ডিফেন্ডার স্টেফান স্যাভিচ। তাতে দলটির রক্ষণভাগ যেন খানিকটা দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ৫ মিনিটের ব্যবধানে রিয়ালকে লিড এনে দেন বেনজেমা। ডান দিক থেকে ডি বক্সে ঢুকে গোলমুখে ক্রস করান মার্কো অ্যাসেন্সিও। এসময় গোলমুখে থেকে শট নিয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তার পায়ে লেগে বল চলে যায় পেছনে থাকা বেনজেমার কাছে। ফাঁকায় বল পেয়ে দারুণ শটে জালে বল জড়ান এই ফরাসি তারকা। এরপর যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে গোলের দেখা পান ভিনিসিয়াস জুনিয়র। ব্রাজিলিয়ান তারকা এই গোলে ৩-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে সেমিফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
জেএন/এমআর