সড়ক পরিবেহন ও সেতু মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান আমাদের দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বারবার পীড়াপীড়ি করে অনুরোধ করেছেন চট্টগ্রামে মেট্টোরেল লাইন স্থাপনের জন্য। তিনি আমাকে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন সময়ে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করেছেন যাতে চট্টগ্রামে মেট্টোরেল চালু করা যাই। তারই সুফল আজকে চট্টগ্রামে মেট্টোরেল প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম আমাদের বাণিজ্যিক রাজধানী, বন্দর নগরী। সেই বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে আমরা ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কোঅর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ) এই উদ্যোগ গ্রহন করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রামের হোটেল রেডিসন ব্লু বে ভিউতে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল নির্মাণের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তথ্যমন্ত্রীকে চট্টগ্রামের কৃতি সন্তান ও জনপ্রিয় সংসদ সদস্য উল্লেখ করে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রীর বক্তব্যের পর চট্টগ্রামের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীও বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের প্রশংসা করে বলেন, চট্টগ্রামে মেট্টোরেল লাইন স্থাপনের জন্য তিনিই প্রথম আওয়াজ তুলেছিলেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বাণিজ্যিক রাজধানী ও বন্দর নগরী চট্টগ্রাম হচ্ছে দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। তাই চট্টগ্রামের যানজট নিরসনে তরুণ প্রজন্মের ড্রিম প্রজেক্ট মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বপ্নের এ প্রকল্প চট্টগ্রামের যানজট নিরসন ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। চট্টগ্রামে যে মেট্রোরেল হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই আজকের দিনটি চট্টগ্রামের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর একনেক সভার কয়েকদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল চালুর ব্যাপারে অনুরোধ জানান তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও উপস্থিত ছিলেন। তথ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম শহরের জনসংখ্যা ৬৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। নির্বিঘ্ন যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে এখনই যদি মেট্রোরেলের উদ্যোগ নেয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে। তথ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম শহরে মেট্রোরেল সার্ভিস চালুর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন উপস্থিত সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও। তিনিও প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে তার আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেন।
মেট্রোরেল প্রকল্পের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামকে অনেক বেশি পছন্দ করেন। তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে চট্টগ্রামের জলজট নিরসন, স্যুয়ারেজ প্রকল্প, বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভারসহ অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নে ইতিপূর্বে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেছেন, যার অধিকাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে ও হচ্ছে। চট্টগ্রামবাসী এর মধ্যে এসব প্রকল্পের সুফল পাচ্ছেন। মেট্টোরেলের ফিজিবিলিটি স্টাডির উদ্বোধন চট্টগ্রামের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর গভীর আন্তরিকতার প্রকাশ এবং নতুন বছরে চট্টগ্রামের জন্য নেত্রীর উপহার।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামকে সর্বাত্মকভাবে এটি আধুনিক ও উন্নত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী সচেষ্ট রয়েছেন। চট্টগ্রামকে বিশ্বমানের শহরে রূপান্তরে তিনি ইতিমধ্যে সব সেবা সংস্থাকে দিয়ে সুদূরপ্রসারী ও টেকসই অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপর জোর দিচ্ছেন। এখন আমরা চট্টগ্রামবাসীর দায়িত্ব হচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা ও সদিচ্ছাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে কাজে লাগানো।
জেএন/এমআর