বাঁশখালী পৌরসভার ভাদালিয়ায় পাওয়া গেছে বিলুপ্তপ্রায় গন্ধগোকুল (খাটাশ)। ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে স্থানীয়দের কাছে বন্দি এ বিরল প্রজাতির গন্ধগোকুল উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন।
জলদী বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা ও বাঁশখালী ইকোপার্কে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, গন্ধগোকুল প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণি। রাতে বাঁশখালী পৌরসভার ভাদালিয়া এলাকার লোকালয়ে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা প্রাণিটির ওপর হামলা চালায়।
এ সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবকের হাতে ধরা পরে গন্ধগোকুল। পরে তারা একটি খাঁচায় বন্দি করে রাখে। পরে উপজেলা প্রশাসন উদ্ধার করে। তিনি জানান, আজ শনিবার বাঁশখালী ইকোপার্কে গন্ধগোকুলটি অবমুক্ত করা হয়।
বনবিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) বিবেচনায় পৃথিবীর বিপন্ন প্রাণির তালিকায় উঠে এসেছে গন্ধগোকুল। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রজাতির গন্ধগোকুলের বাস।
বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ী এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। তাই এটি ধরা বা শিকার করা সম্পূর্ণ বে-আইনি।
বাংলাদেশ বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন ফেডারেশনের (বিবিসিএফ) সভাপতি এস এম ইকবাল বলেন, একসময় গন্ধগোকুল প্রচুর পাওয়া গেলেও বর্তমানে মানুষের অসচেতনতায় প্রাণীটি তেমন চোখে পড়ে না।
গন্ধগোকুল শত্রু দেখলে একধরনের কাঁদানে গ্যাস স্প্রে করে, সেটি প্রাণীটির আত্মরক্ষার হাতিয়ার। এরা দেখতে পোষা বিড়ালের মতোই অনেকটা—খাটো পা, লম্বা লেজ ও শরীর বাদামি রঙের।
প্রাণীটির লেজে আছে সাতটি চওড়া কালো বলয়, গলার নিচে দুটি কালো চওড়া টান, পিঠের ওপর থেকে মেরুদণ্ড বরাবর রয়েছে মোট ছয়টি লম্বা বাদামি রেখা।
নিরীহ স্বভাবের এই প্রাণীকে নানা এলাকায় গন্ধগোকুল, ছোট বাগডাশ, ছোট খাটাশ, গন্ধগুলা, হাইলটালা ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। শরীরের মাপ লেজসহ ৯০ সেন্টিমিটার। ঘাড় থেকে উচ্চতা ২২ সেন্টিমিটার। ওজন ২-৩ কেজি। এদের আয়ুষ্কাল প্রায় ১৫ বছর।
জেএন/এফও/পিআর